নিউজ ডেস্ক : টানা দরপতনের মধ্যে পড়ে গেছে দেশের শেয়ারবাজার। প্রতিদিনেই লেনদেন অংশ নেয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমছে। সেই সঙ্গে কমছে মূল্যসূচক। পাশাপাশি লেনদেনের গতিও কমে এসেছে। দেড় হাজার কোটি টাকার ওপরে উঠে যাওয়া লেনদেন এক হাজার কোটি টাকার নিচে চলে এসেছে।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার তিনগুণের বেশি। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম কমেছে। ফলে দুই বাজারেই কমেছে মূল্যসূচক। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।
মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি দুই বাজারেই কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইতে লেনদেন কমে এক হাজার কোটি টাকার নিচে চলে এসেছে। অথচ এর আগে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা ৮ কার্যদিবস দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয় ডিএসইতে। সেই সঙ্গে টানা ১০ কার্যদিবস মূল্যসূচক বাড়ে।
রোববার দিনের লেনদেন শেষে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমলেও এদিন লেনদেনের শুরুর চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে লেনদেন শুরু হওয়ায় প্রথম মিনিটেই ডিএসইর প্রধান সূচক ১১ পয়েন্ট বেড়ে যায়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকায় লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ২৪ পয়েন্ট।
তবে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পরেই বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসতে থাকে। লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় এই প্রবণতা আরও বাড়ে। ফলে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১০৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৫৬টির। আর ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমলেও ৫টির শেয়ার দাম বেড়ে হল্টেড (একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই বেড়েছে) হয়েছে।
অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৫৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৮৩ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবসের পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমলো ১৬৪ পয়েন্ট। এর আগে ১০ কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ৩৬৮ পয়েন্ট।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১২৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯২৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ৭৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ১৫০ কোটি টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে বেস্ট হোল্ডিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৯ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রবি’র ৪৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৪৫ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফু-ওয়াং সিরামিক।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, লাভেলো আইসক্রিম, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, ফরচুন সুজ, মালেক স্পিনিং, আইটি কনসালটেন্টস এবং আফতাব অটোমোবাইল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২০৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৬৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৯টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা।