চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে দরিদ্রদের অগ্রাধিকার দেয়া উচিত: রাষ্ট্রপতি

নিউজ ডেস্ক : গরিবদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, চিকিৎসক, নার্স এবং সংশ্লিষ্টদের এটি নিশ্চিত করতে হবে যে তারা (গরিব) অর্থের অভাবে যেন চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হয়।

শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘চতুর্থ আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন-২০২৪’ উদ্বোধন করার সময় রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।বাংলাদেশ কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশন এবং ইউএসএ ইন্টারভেনশনাল একাডেমি সম্মেলনের আয়োজন করে।

অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিক বা ভুয়া ডাক্তারদের দ্বারা কেউ যেন প্রতারিত না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে বলেন রাষ্ট্রপ্রধান।

দেশের বিশাল জনসংখ্যার জন্য মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা প্রদান করা একটি চ্যালেঞ্জ। কিন্তু, সরকার ইতিমধ্যেই উন্নত চিকিৎসা সেবার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে… রোগীদের সঙ্গে সদয় আচরণ করুন এবং রোগীর মর্যাদা ও গোপনীয়তা রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ যত্ন প্রদান করুন, তিনি চিকিৎসকদের উদ্দেশে বলেন।

রাষ্ট্রপতি চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসা, সেবা ও গবেষণা কার্যক্রম এবং চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার উন্নতিতে গতিশীলতারও প্রশংসা করেন। পাশাপাশি দেশের সার্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আরও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকার, বেসরকারি খাত ও চিকিৎসকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

রাষ্ট্রপতি সুস্পষ্টভাবে বলেন, বিশাল জনগোষ্ঠীকে চিকিৎসা সেবা প্রদানে চিকিৎসক ও নার্সদের আরও আন্তরিক হতে হবে। তিনি চিকিৎসা পেশাকে মহৎ আখ্যা দিয়ে বলেন, কিছু ভুয়া ডাক্তার ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান শিরোনাম হয় এবং চিকিৎসা সম্প্রদায়ের জন্য বদনাম বয়ে আনে। সুতরাং আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে যাতে কিছু অসাধু লোক (ডাক্তার), ভুয়া চিকিৎসক এবং অবৈধ চিকিৎসা কেন্দ্রের জন্য সাধারণ জনগণের মধ্যে কেউ কোনো নেতিবাচক ধারণা তৈরি করতে না পারে, তিনি বলেন।

বাংলাদেশের চিকিৎসকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশে অনেক বিশ্বমানের চিকিৎসক রয়েছে যাদের ওপর নির্ভর করা যায়। এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশে বিনামূল্যে কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচির সাফল্য তুলে ধরেন যা বিশ্বে একটি রোল মডেল তৈরি করেছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।

এ ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণ ও মতবিনিময়-সভা বিশেষ করে তরুণ চিকিৎসকদের পেশাগত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করবে।

তিনি বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞান প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। নতুন নতুন রোগের আবির্ভাব হওয়ার সাথে সাথে চিকিৎসা বিজ্ঞান সেগুলি কাটিয়ে উঠতে অগ্রসর হয়। এবং বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রকৃতির কথা মাথায় রেখে চিকিৎসা, শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা উচিত।

তিনি হৃদরোগ, ক্যান্সার, এইডস এবং অন্যান্য মারাত্মক রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

জনগণের দোরগোড়ায় সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকারের নিরন্তর প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি নাগরিকের জন্য দূষণমুক্ত, পরিবেশ-বান্ধব সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করে একটি কল্যাণমূলক সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করাই সরকারের লক্ষ্য।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বলেন রাষ্ট্রপ্রধান।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাস্থ্য খাতে ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আপনাদের (চিকিৎসকদের) কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। .

তিনি বলেন, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার নতুন হাসপাতাল ও নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে যার ফলে স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মো. শরফুদ্দিন আহমেদ, ইন্টারভেনশনাল একাডেমির কোর্স চেয়ারম্যান ডা. ইউএসএ, ডা. রাজেশ এম দেব, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ এবং বাংলাদেশ কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিদ্যুতের ভর্তুকি আমরা সমন্বয় করতে চাই : ওবায়দুল কাদের
পরবর্তী নিবন্ধদেশের মানুষের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী