নিউজ ডেস্ক : বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি সর্বনিম্ন ৩৪ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৭০ পয়সা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর গেজেট মঙ্গলবারই জারি হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।
নসরুল হামিদ জানান, বিদ্যুতের নতুন দাম মার্চ মাস থেকে কার্যকর হবে। গ্যাসের দামও বাড়ছে। তবে বাসাবাড়ির গ্রাহক ও শিল্পপর্যায়ে এখন দাম বাড়বে না। শুধু যে গ্যাস ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় সেই গ্যাসের দাম বাড়তে পারে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যে কোনো দেশেই জ্বালানির উপরেই বিদ্যুতের দাম ওঠানামা করে। কাজেই ওটার সঙ্গে আমাদের সমন্বয় করতে হবে, এছাড়া উপায় নেই। আমরা এখন যে কাজটা করছি খুবই অল্প পরিমাণ নিচের লেভেলে ৩৪ পয়সা….। লাইফ লাইন গ্রাহক আছে এক কোটি ৪০ লাখ, তারা চার টাকা করে বিল (ইউনিট প্রতি) দেন, ওপরে যারা আছেন, ৭ টাকা করে তাদের চার্জ হয়। কিন্তু গড়ে আমাদের উৎপাদন খরচ ১২ টাকা।’
সরকারের একটা বড় অংশ এখানে ভর্তুকি হিসেবে দিতে হয় জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ডলারের দামের পার্থক্যের কারণে ভর্তুকি আরও বেশি বেড়েছে। আমরা আস্তে আস্তে যদি সমন্বয়ে না যাই…। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা হলো আগামী তিন বছর আমরা এটাকে সমন্বয় করবো। যাতে সহনীয় পর্যায়ে থেকে সমন্বয়টা হয় সেটার একটা ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নিচের লেভেলে হয়তো ৩৪ পয়সা, উপর লেভেলে হয়তো ৭০ পয়সা, এভাবে আমরা মূল্যটা সমন্বয় করবো।’
মার্চ থেকে নতুন বিদ্যুতের দাম কার্যকর হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে মূল্য সমন্বয়টায় হয়তো আমরা অল্প, ধীরে ধীরে যাবো। মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে তেলের অ্যাডজাস্টমেন্ট শুরু হবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতিক্রমে। আমরা ডায়নামিক প্রাইসিংয়ে যাচ্ছি। ডায়নামিক প্রায়সিংয়েও একই অবস্থা, যদি বিশ্ববাজারে ক্রুড়ের দাম বাড়ে সেটার সঙ্গে সমন্বয় হবে। যদি বিশ্ববাজারে ক্রু দাম কমে সেটার সঙ্গে সমন্বয় হবে।’
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখন থেকে বলা যায় যে, বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ভর্তুকি থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য মূল্য সমন্বয়ে যাচ্ছি। তেলের ক্ষেত্রে আমরা ডায়নামিক প্রাইসিংয়ে যাচ্ছি।’
গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির গেজেট আজকে হয়ে যাবে। বিদ্যুৎ একটা দু’একদিনের মধ্যে এসে যাবে। সেখানে বিস্তারিত থাকবে বলেও জানান নসরুল হামিদ।
গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয় তিনি বলেন, ‘গ্যাসের দাম মূল্য সমন্বয় গ্রাহক পর্যায়ে হচ্ছে না। বিদ্যুতের পর্যায় হচ্ছে। গ্যাসের আবাসিক পর্যায়ে ব্যবহারের ক্ষেত্রে দাম বাড়ছে না। শিল্পেও গ্যাসের দাম বাড়ছে না। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে যে গ্যাস দেওয়া হয় সেখানে আমরা কিছুটা সমন্বয় করছি।’
তিনি বলেন, ‘যে গ্যাস বিদ্যুতে দেওয়া হয় সেখানে ৭৫ পয়সা বাড়বে অর্থাৎ এটা ইন্টারনাল।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ডলারে দামের কারণে যে বাড়তি অংশ ভর্তুকিতে দিতে হচ্ছে, সেই জায়গাটায় আমাদের মূল্য সমন্বয় করতে হচ্ছে।’
এ বছর বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ৪৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি আসবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জ্বালানির ক্ষেত্রে ৬ হাজার কোটি টাকার মতো ভর্তুকি আসবে। এগুলো আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আমরা সমন্বয়ে যাবো। এরই মধ্যে আমরা কুইক রেন্টাল থেকে বেরিয়ে এসেছি। আমরা ডিজেল থেকে বেরিয়ে এসেছি।’