সায়মা ওয়াজেদ ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক পরিচালকের দায়িত্ব নিচ্ছেন আজ

নিউজ ডেস্ক :
বৈশ্বিক মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ আগামী পাঁচ বছরের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালকের (আরডি) দায়িত্ব নেবেন আজ বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি)।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের জন্য ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক কমিটির ৭৬তম অধিবেশনে সদস্য দেশগুলো ভোটের মাধ্যমে সায়মা ওয়াজেদকে এ পদে মনোনীত করে।

ডব্লিউএইচও সূত্রে জানা গেছে, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ২২-২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ডব্লিউএইচওর নির্বাহী বোর্ডের ১৫৪তম অধিবেশনে তার এ মনোনয়ন অনুমোদন করা হয়। সায়মা ওয়াজেদ ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের বিদায়ী আঞ্চলিক পরিচালক ড. পুনম ক্ষেত্রপাল সিংয়ের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন।

নয়াদিল্লিতে এ ভোটগ্রহণে বাংলাদেশ, ভুটান, গণতান্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়া (ডিপিআরকে), ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও তিমুর-লেস্তে অংশ নেয়। এতে বিশিষ্ট অটিজম বিশেষজ্ঞ ওয়াজেদ আটটি ভোট পান। অন্য প্রার্থী নেপাল মনোনীত ডা. শম্ভু প্রসাদ আচার্য্য পেয়েছেন দুটি ভোট।

সায়মা ওয়াজেদ বাংলাদেশের প্রথম ও ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দ্বিতীয় মহিলা আঞ্চলিক পরিচালক। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা ও একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। তিনি অটিজমের ভূমিকার জন্য বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছেন। তিনি ডব্লিউএইচও মহাপরিচালকের মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা। সায়মা ওয়াজেদ প্রথম বাংলাদেশি যিনি ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক বিভাগের অংশ হিসেবে ১৯৪৮ সালে তৈরি করা পদটিতে অধিষ্ঠিত হতে যাচ্ছেন।

তিনি এমন একসময় বাংলাদেশে অটিজম সচেতনতার প্রচারণার নেতৃত্ব দিয়েছেন যখন পিতামাতারা সামাজিক কলঙ্কের ভয়ে তাদের সন্তানদের অটিজম হওয়ার বিষয়টি লুকিয়ে রাখতেন।

সায়মা ওয়াজেদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ব্যারি ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংগঠনিক নেতৃত্বে ডক্টরেট প্রার্থী।

২০১৯ সাল থেকে সায়মা ওয়াজেদ মানসিক স্বাস্থ্য ও অটিজম সম্পর্কিত ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালকের অন্যতম উপদেষ্টা ছিলেন এবং ২০১৪ সাল থেকে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা প্যানেলের সদস্য ছিলেন। সায়মা ওয়াজেদ ২০১৭ সালে ডব্লিউএইচও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অটিজমবিষয়ক শুভেচ্ছা দূত মনোনীত হন। তিনি একই বছর প্রকাশিত অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার সম্পর্কিত ডব্লিউএইচও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কৌশলপত্রের সহ-লেখক।

তিনি গ্লোবাল হেলথ প্রোগ্রাম চ্যাথাম হাউস, ইউকের একজন সহযোগী ফেলো, অটিজম ও এনডিডি, ঢাকা বাংলাদেশের জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন এবং শুচনা ফাউন্ডেশন, ঢাকা, বাংলাদেশের চেয়ারপারসন।

সায়মা ওয়াজেদ অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার নিয়ে কাজের জন্য ২০১৪ সালে ডব্লিউএইচও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া আঞ্চলিক কার্যালয় প্রদত্ত ‘এক্সিলেন্স ইন পাবলিক হেলথ’ পুরস্কার এবং ২০১৬ সালে ডা. ইব্রাহিম মেমোরিয়াল কাউন্সিল, বাংলাদেশ প্রদত্ত ইব্রাহিম মেমোরিয়াল গোল্ড মেডেল পান।

২০১৭ সালে সায়মা ওয়াজেদ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অটিজম নিয়ে কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ মার্কিন সংস্থা শেমা কোলাইনু থেকে আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার পান। ২০১৯ সালে তাকে গ্লোবাল মেন্টাল হেলথ প্রোগ্রামস, কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি, ইউএসএ ইনোভেটিভ উইমেন লিডারস ইন গ্লোবাল মেন্টাল হেলথ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্যাংক খাত সংস্কারে এমডিদের কঠোর নির্দেশনা দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক
পরবর্তী নিবন্ধআজ থেকে শুরু হলো ভাষা আন্দোলনের মাস