নিউজ ডেস্ক : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ আরও দুই শিশু মারা গেছে। সোমবার (১৮ মার্চ) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজনই মারা যায় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০ জনে।
সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় শিশু সোলায়মান (১০) ও সকাল পৌনে ৭টার দিকে শিশু রাব্বি (১১) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
শিশু সোলায়মান ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার শফিকুল ইসলামের ছেলে। শিশুর রাব্বি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানার মো. শাহ আলমের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. তরিকুল ইসলাম।
এছাড়াও রোববার (১৭ মার্চ) দিবাগত রাতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জহিরুল ও মোতালেব নামে দুই মারা যান।
একই দিন সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরিফুল ইসলাম (৩৫) ও মইদুল (৩০) নামে দুজন মারা যান। এদের মধ্যে আরিফুল গার্মেন্টস কর্মী ও মইদুল কারখানায় কাজ করতেন।
তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম। তিনি জানান, আরিফুলের শরীরের ৭০ শতাংশ আর মইদুলের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। আইসিইউতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল তাদের। সেখানেই রোববার ভোরে তারা মারা যান।
আরিফুলের স্ত্রী সুমি আক্তার জানান, তাদের বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আলাইপুর গ্রামে। বাবার নাম আ. রাজ্জাক বিশ্বাস। পরিবার নিয়ে কালিয়াকৈরে থাকতেন তিনি। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই গার্মেন্টসে চাকরি করেন।
এদিকে মৃত মইদুলের ভাগিনা মো. আকাশ জানান, মইদুলের বাড়ি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বেড়াখোলা গ্রামে। বাবার নাম সাবেত খা। কালিয়াকৈরে একটি গোডাউনে কাজ করতেন তিনি।
এর আগে, শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকালে সোলাইমান মোল্লা (৪৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়। শনিবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় তায়েবা (৩) নামে দগ্ধ এক শিশু ও ভোরে মনসুর (৩২) নামে দুজনের মৃত্যু হয়। তারা সবাই শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বুধবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিচালা এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজের আগুন থেকে দগ্ধ হয়ে নারী-শিশুসহ ৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, তেলিরচালা টপস্টার কারখানার পাশে শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী শ্রমিক কলোনি তৈরি করে ভাড়া দিয়েছেন। তার বাড়িতে থাকা সিলিন্ডারের গ্যাস শেষ হয়ে গেলে পাশের দোকান থেকে তিনি নতুন গ্যাস সিলিন্ডার কিনে নিয়ে আসেন। বাড়িতে সেটি লাগানোর সময় সিলিন্ডারের চাবি খুলে গিয়ে পাশের চুলা থেকে আগুন ধরে যায়। তখন তিনি গ্যাস সিলিন্ডারটি ছুড়ে মারেন বাইরে। এ সময়ে বিস্ফোরণে আশপাশে থাকা শিশু, নারী ও পথচারীর শরীরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ৩৪ জন দগ্ধ হন।
পরে দগ্ধদের উদ্ধার করে কোনাবাড়ী এলাকার কয়েকটি হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে তাদের ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।