ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটিতে ভোটগ্রহণ শুরু

নিউজ ডেস্ক : নগরপিতা বেছে নিতে ভোটযুদ্ধে শামিল হয়েছেন ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটির ভোটাররা। শনিবার (৯ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। যা চলবে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

এর মধ্যে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনে সাধারণ নির্বাচন ও কুমিল্লা সিটির মেয়রের মৃত্যুতে এ পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভোটারদের সুবিধার জন্য আজ ময়মনসিংহ সিটিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ সিটিতে ১২৮টি ভোটকেন্দ্রের ৯৯০টি ভোটকক্ষে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাচ্ছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৭২ জন। নারী ভোটার ১ লাখ ৭২ হাজার ৬১৫ জন এবং নয়জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার।

এই সিটিতে মেয়র পদে পাঁচজন, ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১৪৯ জন এবং ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মেয়র প্রার্থীরা হলেন, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু (টেবিল ঘড়ি), জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম (ঘোড়া), উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাদেক খান মিল্কী টজু (হাতি), কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য রেজাউল হক (হরিণ) এবং জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম স্বপন মণ্ডল (লাঙ্গল)।

নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডের ১২৮টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে অন্তত ৫০টি কেন্দ্রকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়েছে। ভোটের পরিবেশ শান্ত রাখতে সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৯ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। এছাড়া রয়েছে মোবাইল টিম, স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে পুলিশ, এপিবিএন, আনসার ব্যাটালিয়ন, বিজিবি ও র‍্যাব।

ময়মনসিংহের একটি ভোটকেন্দ্র
ভোটের পরদিন পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃংখলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১১ জন ম্যাজিস্ট্রেট মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। এক হাজার ৫৩৬ জন আনসার, ৭ প্লাটুন বিজিবি, ১৭ টিম র‍্যাব কাজ করছে।

অন্যদিকে, কুমিল্লা সিটির ২৭টি ওয়ার্ডে পুলিশ, এপিবিএন ও আনসারের ২৭টি, ৯টি স্ট্রাইকিং ফোর্স ও দুইটি রিজার্ভ টিম থাকছে। এছাড়া নিয়োজিত থাকছে র‍্যাবের ২৭টি টিম ও বিজিবি ১২ প্লাটুন।

উপনির্বাচনে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবার দলীয় কোনো প্রতীক না থাকায় সরকার দলীয় দুইজন এবং বিএনপির বহিস্কৃত দুই নেতা মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহারের মেয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. তাহসিন বাহার সূচনা বাস প্রতীকে, মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম হাতী প্রতিকে, বিএনপির আজীবন বহিস্কৃত নেতা, সাবেক দুইবারের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু টেবিল ঘড়ি প্রতীকে এবং বিএনপির আরেক বহিস্কৃত নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার ঘোড়া প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ সিটিতে ২ লাখ ৪২ হাজার ৪৫৮ জন ভোটার ১০৫টি কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ১৮ হাজার ১৮২ জন, নারী ১ লাখ ২৪ হাজার ২৭৪ জন ও হিজড়া দুইজন।

দুই সিটি নির্বাচনেই ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাধারণ কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর ১৬ জনের ফোর্স ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ জনের ফোর্স মোতায়েন থাকছে। এদিকে পৌরসভাগুলোয় ১২ থেকে ১৪ জনের ও ইউপির নির্বাচনগুলোতে ২২ জনের ফোর্স নিয়োজিত করেছে ইসি।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন আছে। ভোটাররা নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেন। কোথাও কোনো অনিয়মের খবর পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিটি কর্পোরেশন এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় যেকোনো জায়গায় ৫ মিনিটের মধ্যেই কর্তৃপক্ষ পৌঁছানো সম্ভব। কেউ কোনো অনিয়ম করে পার পাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন এই কর্মকর্তা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসতর্ক থাকায় বিডিএস ভর্তি পরীক্ষায় নেতিবাচক কিছু ঘটেনি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধসিরিজ জয়ের লক্ষ্যে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ