নিউজ ডেস্ক :
দরপতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। প্রায় প্রতিদিনই লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এতে কমছে মূল্যসূচক। আর বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লাও হচ্ছে ভারী।
আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সোমবারও (১১ মার্চ) শেয়ারবাজারে মূল্যসূচক কমেছে। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস মূল্যসূচক কমলো। আর শেষ ১৯ কার্যদিবসের মধ্যে ১৬ কার্যদিবসেই সূচক কমলো।
এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে কম। এরপরও সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। তবে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ফলে এ বাজারটিতেও সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার সঙ্গে সূচক কমলেও এ বাজারে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকায় লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৫ পয়েন্ট বাড়ে।
লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকেনি। লেনদেনের শেষ দিকে বড় মূলধনের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। এতে দাম বাড়ার তালিকায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান থাকার পরও সবকটি মূল্যসূচক কমেছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৭৪টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৩টির। আর ৫৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা ১০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই বেড়েছে।
এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৬ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৫৮ পয়েন্টে নেমে গেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৭৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩২২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমলেও লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৭৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ২৭৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে ফু-ওয়াং সিরামিকসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৫৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের ৪৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- গোল্ডেন সন, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, বেস্ট হোল্ডিং, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, ফাইন ফুড এবং আফতাব অটোমোবাইল।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৪টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১১ কোটি ৫১ লাখ টাকা।