আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সরবরাহের ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তেলের দামও। গত মঙ্গলবার রেকর্ড বৃদ্ধির পর বুধবার (৩ এপ্রিল) বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম আরও বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৯০ মার্কিন ডলার ছুঁইছুঁই করছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুসারে, এদিন অপরিশোধিত তেলের আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ৭৫ সেন্ট বা ০.৮৪ শতাংশ বেড়ে ৮৯ দশমিক ৬৭ ডলারে পৌঁছেছে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ৭৩ সেন্ট বা ০.৮৬ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৮৫ দশমিক ৮৮ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
এর আগে, গত মঙ্গলবার ব্রেন্ট এবং ডব্লিউটিআই উভয় বেঞ্চমার্কের দাম একলাফে ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছিল, যা গত অক্টোবরের পর থেকে সর্বোচ্চ।
মঙ্গলবার রাশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম তেল শোধনাগারে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। ফলে রাশিয়ার তেল পরিশোধনের সক্ষমতা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে রুশ তেলের সরবরাহ আরও কমে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
বিনিয়োগকারীরা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত আরও ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কার দিকেও সতর্ক নজর রাখছেন। গত সোমবার সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে ইরানের সাত কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এর কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে তেহরান।
তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেকের সদস্যদের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম উৎপাদক ইরান। এ অবস্থায় ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের পাশাপাশি ইরানেও সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে তা আন্তর্জাতিক বাজারে তেল সরবরাহে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
পিভিএমের বিশ্লেষক তামাস ভার্গ মঙ্গলবারের মূল্যবৃদ্ধির পর বলেছেন, উভয় হটস্পটে শত্রুতা বৃদ্ধি এ বছর দু’ধরনের অপরিশোধিত তেলের দামকেই তাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ে ঠেলে দিয়েছে।
ব্যাংক অব আমেরিকা গ্লোবাল রিসার্চ বুধবার এক নোটে বলেছে, ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা দীর্ঘ বাণিজ্য রুটের মাধ্যমে তেলের চাহিদা বাড়িয়েছে এবং রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলার ফলে পরিশোধন সক্ষমতা কমে যাওয়া সরবরাহ ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করেছে।
এগুলো ছাড়াও, বুধবার তাইওয়ানে গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পের কারণে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ফর্মোসা পেট্রোকেমিক্যাল তাদের মাইলিয়াও শোধনাগারে কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছিল। অবশ্য সেখানে কাজ আবারও শুরু হয়েছে।