সাগরে তেল-গ্যাস উত্তোলনে ৭টি কোম্পানি দরপত্র কিনেছে: নসরুল হামিদ

নিউজ ডেস্ক : সাগরে তেল-গ্যাস উত্তোলনে এখন পর্যন্ত ৭টি বড় বড় কোম্পানি দরপত্র কিনেছে। পনেরটির অধিক কোম্পানি আগ্রহ দেখাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

বুধবার (৮ মে) রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে বিডিং রাউন্ড সংক্রান্ত সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, বিশ্বের নামিদামি ৭টির অধিক কোম্পানি বিড ডকুমেন্ট (দরপত্র) কিনেছে। তারা মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভের ডাটাও কিনেছে। আরও অনেক কোম্পানি আগ্রহ দেখাচ্ছে। আজকের সেমিনারে ১৫টির বেশি বিদেশি কোম্পানি অংশ নিয়েছে। এতে বুঝা যায় আমাদের সাগরের দরপত্র নিয়ে কতটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গ্যাসের বিশাল বাজার রয়েছে আমাদের দেশে। আমাদের মডেল পিএসসি (উৎপাদন বন্টন চুক্তি) বিশ্বের সর্বাধুনিক। এখানে উভয়পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিড ডকুমেন্ট (দরপত্র) বিক্রি ও জমার কাজ শেষ করবো, এরপর মূল্যায়ন শেষে আগামী বছর চুক্তি করতে চাই। সবকিছু ঠিক থাকলে ৭ থেকে ৮ বছরের মধ্যে গ্যাস পাওয়া যাবে।

অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, আমাদের সাগরাঞ্চল একটি সমৃদ্ধ এলাকা। আন্তর্জাতিক দরপত্রে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আবার মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভের ডাটার কারণে তারা বুঝতে পারছে এখানকার সম্ভাবনার তথ্য।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হলে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করতে হয়। আমরা সেটাই করেছি, শুধু আমাদের স্বার্থ দেখলে তারা বিনিয়োগ করতে আসবে না, আবার তাদের স্বার্থ দেখলে আমাদের কিছু হবে না। তাই মধ্যমপন্থা অবলম্বন করে উভয়ের স্বার্থ সংরক্ষণ করা হয়েছে। গ্যাসের দাম ব্রেন্টক্রুডের সঙ্গে মিল রেখে নির্ধারিত হবে।

প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা বলেন, অনেক দেশে সাগরের সীমানা নিয়ে বিবাদ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতায় প্রতিবেশী দুই দেশের সঙ্গে শান্তপূর্ণ উপায়ে বিশাল অঞ্চলে অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যা অনেকে জন্য শিক্ষণীয়।

সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য গত ১১ মার্চ আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এতে অংশগ্রহণের জন্য বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের ৫৫টি কোম্পানিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সাগর সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির পর ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার সমুদ্র অঞ্চলের ওপর মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের। গভীর সমুদ্রে ১৫টি ও অগভীর সমুদ্রে ১১টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১০ সালে গভীর সমুদ্রে ডিএস-১০ ও ডিএস-১১ ব্লকে কাজ নেয় কনোকো ফিলিপস। তারা ২ডি জরিপ শেষে গ্যাসের দাম বাড়ানোর দাবি করে। সেই দাবি পূরণ না হওয়ায় কাজ ছেড়ে চলে যায়।

এছাড়া চুক্তির পর কাজ ছেড়ে চলে যায় অস্ট্রেলিয়ার স্যান্তোস ও দক্ষিণ কোরিয়ার পস্কো দাইয়ু। এখন একমাত্র কোম্পানি হিসেবে অগভীর সমুদ্রের দুটি ব্লকে অনুসন্ধান চালাচ্ছে ভারতের কোম্পানি ওএনজিসি। এ দুটি বাদ দিয়ে বাকি ২৪টি ব্লকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিঙ্গাপুর-কাতার থেকে তিন কার্গো এলএনজি কিনবে সরকার
পরবর্তী নিবন্ধডলারের দাম ১১০ থেকে বেড়ে ১১৭ টাকা