নিউজ ডেস্ক : এবার পবিত্র ঈদুল আজহায় সারাদেশে চার হাজার ৪০৭টি পশুর হাট বসবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মঙ্গলবার (২৮ মে) সচিবালয়ে ঈদুল আজহার প্রস্তুতি সভা শেষে এ কথা জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘ঈদুল আজহা সম্ভবত ১৭ জুন হতে যাচ্ছে। প্রতি বছর আমরা ঈদ, পূজাসহ জাতীয় দিবসগুলোতে দেশের জনগণকে নিরাপদে রাখতে পারি, একই সঙ্গে উৎসবগুলো যাতে আনন্দঘন পরিবেশে হয় সবাই যেন অংশগ্রহণ করতে পারে- এ লক্ষ্যে আজকের এই সভা।’
পশুর হাটের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রাপ্ত তথ্যমতে সিটি করপোরেশন ও মহানগর জেলাগুলোসহ সারাদেশে মোট চার হাজার ৪০৭টি পশুর হাট বসার তথ্য আমাদের কাছে আছে। এটা হয়তো বাড়তেও পারে। প্রতিটি পশুর হাটে অস্থায়ী পুলিশের ক্যাম্প বসানো হবে। হাটে ওয়াচ-টাওয়ার, জালনোট শনাক্তকরণ মেশিন, পশুচিকিৎসক থাকবেন। পশুর হাটে পুলিশ-র্যাবের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন।
‘আপনারা জানেন এটা ঈদুল আজহা, এজন্য পশুবাহী যানবাহনের আধিক্য দেখা যাবে। সেজন্য তাদের নির্দেশনা দেওয়া হবে, তারা যেন সব সময় রাস্তার বাম পাশের লেন ব্যবহার করে। তারা যেন রাস্তার মধ্যে না আসে বা ডানেও না যায়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘পশুবাহী গাড়িতে তাদের গন্তব্যস্থল বা কোন হাটে যাবে সেই হাটের নাম গাড়ির সামনে লিখে রাখতে হবে। এটার উদ্দেশ্য হলো রাস্তাঘাটে কেউ যাতে জোর করে গাড়ি থেকে পশু নামাতে না পারে। একই সঙ্গে কেউ যাতে চাঁদাবাজি করতে না পারে। এছাড়া রাস্তার ওপর পশুর হাটে তারা কোনো পশু নামাতে পারবে না, রাস্তায় দাঁড়াতে পারবে না। তাদের জন্য নির্দিষ্ট স্থান আছে, সেখানেই তারা পশু নামাবে।’
সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, পবিত্র ঈদযাত্রায় সড়ক-মহাসড়কে এবং শহর এলাকায় যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশ জেলা পুলিশ সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করবে। জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে যানজট নিরসনে গতবারও ড্রোন ব্যবহার করেছিলাম। এবারও যানজট নিরসনে ড্রোন ব্যবহার করবো। মহাসড়কে সিসি ক্যামেরা বৃদ্ধিসহ যানজট নিরসনে আধুনিক প্রযুক্তি ক্রমান্বয়ে বাড়ানো হচ্ছে।
যানজট প্রবণ এলাকায় ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে এর কারণ চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়কে গাড়ির অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণে স্পিডগান ব্যবহার করবে পুলিশ। অতিরিক্ত গতি সম্পন্ন যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা তাৎক্ষণিকভাবে নেওয়া হবে।
ঈদযাত্রার গাড়ি ভাড়া নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত ঈদে যেভাবে ছিল সেভাবেই থাকবে, ভাড়া বৃদ্ধি করবে না। এটা মালিক, পরিবহন শ্রমিকদের প্রতিনিধিরা বলেছেন।
ঈদুল আজহার আগে তিনদিন এবং পরের তিনদিন পচনশীল দ্রব্য ও যাত্রী পরিবহন ছাড়া অন্য সব ধরনের পরিবহন বন্ধ থাকবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ঈদের আগে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মে মাসের বেতন সম্পূর্ণ দিতে হবে। একই সঙ্গে বোনাস ঈদের ছুটির আগে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ’র প্রেসিডেন্টরা সবাই একমত।
‘সরকারি ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পর্যায়ক্রমে ছুটির ব্যবস্থা করবে। যাতে করে যানজটের সমস্যা না হয়। শিল্প এলাকার নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অযথা গুজব, উস্কানি দিয়ে যারা অসন্তোষ সৃষ্টি করেন কিংবা প্রয়াস করবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জাতীয় ঈদগাহর ময়দান ও শোলাকিয়া মাঠসহ সারা দেশের বড় ও গুরুত্বপূর্ণ ঈদের জামাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল পশুপরিবহনের জন্য বিশেষ ক্যাটেল ট্রেন চালু করবে বলেও জানান আসাদুজ্জামান।
রাতে কোনো বাল্কহেড, যাত্রীবাহী স্পিডবোট, ছোট লঞ্চ চলাচল করতে পারবে না বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।