নিউজ ডেস্ক : ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে ৬০টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। বুধবার (৫ জুন) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোট গণনা শেষে রাতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
রংপুর
চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রংপুরের বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে বদরগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে টানা তৃতীয়বারের মতো বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুইট। কাপ-পিরিচ প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৬১ হাজার ৫৯৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হাসান তবিকুর চৌধুরী মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৭৫২ ভোট।
অন্যদিকে তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আনিছুর রহমান লিটন। দোয়াত-কলম প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৪১ হাজার ৭৩৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাহিনুর ইসলাম মার্শাল মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ২৫ হাজার ১৮৬ ভোট।
ভোটগণনা শেষে রাতে বেসরকারিভাবে নির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোছা. শাহানাজ বেগম।
ফেনী
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মজুমদার কাপ-পিরিচ প্রতীকে ৫৪ হাজার ৯২১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী এএসএম সহিদ উল্ল্যাহ মজুমদার পেয়েছেন ১ হাজার ৩৪৯ ভোট।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) অভিষেক দাশ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যশোর
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে যশোর সদর উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেসরকারি ফলাফলে যশোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৫৭ হাজার ৯১৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী তৌহিদ চাকলাদার ফন্টু। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফতেমা আনোয়ার ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৫৫ হাজার ৬১০ ভোট।
যশোর জেলা অতিরিক্ত নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ ও রায়গঞ্জ উপজেলায় ইভিএমের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কামারখন্দ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মতিন চৌধুরী। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১৭ হাজার ২৮৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সেলিম রেজা দোয়াত-কলম প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ১৭৮ ভোট।
অন্যদিকে রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে গোলাম হোসেন শুভন সরকার ঘোড়া প্রতীকে ৭০ হাজার ৮৪২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইমরুল হোসেন তালুকদার ইমন দোয়াত-কলম প্রতীকে পেয়েছেন ১৭ হাজার ৮০৫ ভোট।
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটানিং অফিসার মো. ইমরান হোসেন বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।
বগুড়া
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে বগুড়ার নন্দীগ্রামে বিপুল ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা। তিনি মোটরসাইকেল প্রতীকে ৪১ হাজার ৩৭৯ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৮ হাজার ৫১ ভোট।
রাতে নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. হুমায়ুন কবির।
অন্যদিকে ধুনটে ৪০ হাজার ৬০ ভোটে আনারস প্রতীক নিয়ে বেসরকারিভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আসিফ ইকবাল। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি টিআইএম নুরুন্নবী তারিক মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৩৬২ ভোট।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. আশিক খান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ফরিদপুর
চতুর্থ ধাপে ফরিদপুরের বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বোয়ালমারী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম.এ. মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া। দোয়াত-কলম প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৪৩ হাজার ২৩৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী জেলা যুবলীগের সদস্য শরীফ মোহাম্মদ সেলিমুজ্জামান লিটু পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৩৫৫ ভোট।
অন্যদিকে আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি কাজী মনিরুল হক বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
মোটরসাইকেল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১৪ হাজার ৭২২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ও কাপ-পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী জেলা যুবলীগের সদস্য ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কে.এম.জাহিদুল হাসান পেয়েছেন ১০ হাজার ৮৭৮ ভোট।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এই নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রামানন্দ পাল বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। মানুষ তাদের ভোট বাধাহীনভাবে প্রয়োগ করেছে।
টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে কেএম গিয়াস উদ্দিন, মির্জাপুরে ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত ও সখীপুরে মুহাম্মদ আবু সাইদ মিয়া চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছে। এছাড়াও বাসাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কাজী অলিদ ইসলাম পুনরায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মতিয়ুর রহমান বেসরকারিভাবে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন। তিনি জানান, চার উপজেলার ৩৬৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এসব উপজেলায় ২০ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ভাইস চেয়ারম্যান ১৩ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ১১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। গোপালপুর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ ও মহিলা প্রার্থীরা আগেই বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ওই উপজেলায় শুধুমাত্র চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৮ মে ১৩৯ উপজেলায়, দ্বিতীয় ধাপে ২১ মে ১৫৬ উপজেলায় এবং তৃতীয় ধাপে ২৯ মে ৮৭ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। চতুর্থ ধাপে ৫ জুন ৬০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হয়। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে স্থগিত হওয়া ২০ উপজেলায় ভোট হবে ৯ জুন।