স্পোর্টস ডেস্ক :
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতকে দ্বিতীয়বারের মতো হারানোর দারুণ এক সম্ভাবনা তৈরি করে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের বোলাররা। কিন্তু ব্যাটারদের কাণ্ডজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে সহজ ম্যাচ হেরে বসেছে পাকিস্তান। বাবর আজমের দলকে ৬ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপে দুই ম্যাচের দুটিতেই জয় তুলে নিয়েছে ভারত।
শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ ও মোহাম্মদ আমিরদের তোপে মাত্র ১১৯ রানেই অলআউট হয়ে গিয়েছিল ভারত। এরপর ভারতীয় বোলারদের পাল্টা আক্রমণে ৭ উইকেটে ১১৩ রানে আটকে গেছে পাকিস্তান।
রোববার নাসাউ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১২০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে কিছুটা আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে শুরু করেছিলেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে বাবরকে ১৩ রানে (১০ বলে) থামিয়ে দেন জাসপ্রিত বুমরাহ। প্রথম স্লিপে সূর্যকুমার যাদবের হাতে ক্যাচ হন তিনি।
দলীয় ২৬ রানে প্রথম উইকেটের পতনের পর পাকিস্তান দ্বিতীয় উইকেট হারায় ৫৭ রানের মাথায়। অক্ষর প্যাটেলের বলে এলবিডব্লিউ হন উসমান খান (১৫ বলে ১৩)। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে পাকিস্তান।
ফখর জামানকে ফেরান হার্দিক পান্ডিয়া (৮ বলে ১৩)। উইকেটরক্ষক রিশভ পান্তের হাতে ক্যাচ হন বাঁহাতি পাকিস্তানি ব্যাটার। মাঝের এক ওভার পরই সাজঘরের পথে হাটেন রিজওয়ান (৪৪ বলে ৩১)। বুমরাহকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। ১৭তম ওভারের তৃতীয় বলে পান্ডিয়ার দ্বিতীয় শিকার হন শাদাব খান (৭ বলে ৪)।
শেষ দিকে পাকিস্তানের সামনে জয়ের জন্য পরিসংখ্যান দাঁড়ায় ১২ বলে ২১ রান। ১৯তম ওভারে বল করতে আসেন বুমরাহ। ওই ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে ইফতেখার আহমেদের (৯ বলে ৫) উইকেট তুলে নেন তিনি।
শেষ ওভারে দরকার ১৮ রান। প্রথম বলেই শেষ স্বীকৃত ব্যাটার ইমাদ ওয়াসিমকে উইকেটরক্ষকের হাতের ক্যাচ বানান অর্শদীপ। ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে ব্যাক-টু-ব্যাক বাউন্ডারি হাঁকান নাসিম শাহ। শেষ বলে দরকার ৮ রান। সেখানে মাত্র ১ রান নিতে পারেন নাসিম।
এর আগে বৃষ্টির কারণে খেলা শুরু হয় এক ঘণ্টা দেরি করে। এরপর টস হেরে ব্যাট করতে নামা ভারত মাত্র ১ ওভার ব্যাট করতে পারে। আবার শুরু হয় বৃষ্টি। ২৫ মিনিট অপেক্ষার পর ফের খেলা শুরু হয়। মাঠে নেমেই আউট হয়ে যান বিরাট কোহলি (৪ বলে ৩)। নাসিম শাহের বলে উসমান খানের হাতে ক্যাচ হন তিনি। পরের ওভারে রোহিত শর্মাকেও সাজঘরের পথ দেখান শাহিন শাহ আফ্রিদি। হারিস রউফের তালুবন্দি হন ভারতীয় অধিনায়ক।
এরপর অক্ষর প্যাটেলকে নিয়ে ৩৯ রানের জুটি করে রিশভ পান্ত। প্যাটেল ১৮ বলে ২০ রান করে নাসিম শাহের বলে বোল্ড হয়ে গেলে জুটি ভাঙে। পরে ৩১ রানের আরও একটি জুটি করেন পান্ত ও সূর্যকুমার যাদব। সূর্যকে ৭ রানের (৮ বলে) বেশি করতে দেননি হারিস রউফ।
এরপর বাকি ক্রিকেটাররা মূলত আসা-যাওয়ার মিছিলে যোগ দেন। দলীয় ৬ রান যোগ না হতেই উইকেট বিলিয়ে দেন শিবম দুবে (৯ বলে ৩)। নাসিম শাহকে ফলোথ্রু করেন তিনি।
একপ্রান্ত ধরে রেখে যিনি ভারতকে ১০০ রানের কাছাকাছি নিয়ে এসেছিলেন সেই পান্তকেও শেষ পর্য্ন্ত ফিরতে হয় ফিফটির আগেই (৩১ বলে ৪২)। আমিরের বলে বাবরের হাতে ক্যাচ হন তিনি।
পরের বলেই রবীন্দ্র জাদেজাকে (১ বলে ০) আউট করেন আমির। ইমাদ ওয়াসিমের হাতে ক্যাচ হন তিনি। অর্থাৎ ৯৬ রানেই ৭ উইকেট হারায় ভারত।
হার্দিক পান্ডিয়াকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান হারিস রউফ। ডানহাতি এই পেসারকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লেগসাইড বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডিং করা ইফতেখার আহমেদের হাতে ধরা পড়েন ভারতীয় অলরাউন্ডার।
পরের বলেই জাসপ্রিত বুমরাহকে আউট করেন হারিস। তিনিও ইমাদের হাতেই ধরা দেন। ১৯তম ওভারের শেষ বলে অর্শদীপ সিং হন রানআউট। এতে ভারতীয়দের ইনিংস থামে ১১৯ রানে।
পাকিস্তানের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন নাসিম শাহ ও হারিস রউফ। ২টি উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ আমির। আর ১টি উইকেট নিজের নমের পাশে লেখান শাহিন আফ্রিদি। ভারতের হয়ে ৩টি উইকেট নেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ২ উইকেট শিকার করেন হার্দিক পান্ডিয়া।