নিউজ ডেস্ক : দেশের চলমান অর্থনৈতিক চাপের মধ্যে বেড়েই চলছে খেলাপি ঋণ। চলতি বছরের মার্চ মাস শেষে দেশের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। যা বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ১১ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি-মার্চ সময়ে দেশের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৬ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা। আর এক বছরে (মার্চ ২০২৩ থেকে মার্চ ২০২৪) খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫০ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষে ব্যাংকখাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। সে সময়ে মোট ঋণের মধ্যে খেলাপি ঋণ ছিল ৯ শতাংশ।
দেখা গেছে, মার্চে যে পরিমাণ খেলাপি ঋণ বেড়েছে এরমধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ হাজার ২২১ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৬৫ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা। এরমধ্যে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ মার্চে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা এবং অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া সরকারি খাতের বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসির (বিডিবিপি) খেলাপি ঋণ ৮৭৩ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে সরকারি ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের ২০ দশমিক ৯৯ শতাংশ খেলাপি ছিল, যা মার্চে বেড়ে হয়েছে ২৭ শতাংশ।
বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে মার্চে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকে ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৭০ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ ডিসেম্বরে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ছিল ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ, যা মার্চে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ।
বিশেষায়িত দুটি ব্যাংকের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের খেলাপি ঋণ গত ডিসেম্বর শেষে ছিল ৫ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। যা মার্চে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।
বিদেশি ব্যাংকগুলোতেও খেলাপি ঋণ বেড়েছে। ডিসেম্বরে বিদেশি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ ছিল ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। মার্চে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
ব্যাংকাররা বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয় ব্যাপক পরিমাণে মন্দ ঋণ বাড়ায় সার্বিকভাবে ব্যাংকিংখাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। এই সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো বেশ কিছু গ্রাহকদের দীর্ঘদিন আদায় না হওয়া ঋণখেলাপি হিসেবে দেখিয়েছে।