নিউজ ডেস্ক : ঋণ পরিশোধে জনতা ব্যাংকের সাথে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করেছে রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান এননটেক্স। প্রতিষ্ঠানটির ১২৮ একর জমির মধ্যে ঋণ পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় জমি বিক্রির অর্থ নিজ হিসাব থেকে জনতা ব্যাংককে দেবে এননটেক্স গ্রুপ। ব্যাংকে টাকা জমার মাধ্যমে আগামী দুই বছরের মধ্যে এননটেকস ৪৯০০ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ করবে।
পরিচালনা পর্ষদের সাম্প্রতিক এক সভায় শর্ত সাপেক্ষে এননটেক্স গ্রুপকে এ সুবিধা দিয়েছে জনতা ব্যাংক।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত এননটেক্স গ্রুপের কাছে অনারোপিত সুদসহ ব্যাংকের পাওনা ছিল ৮ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা। এককালীন ঋণ পরিশোধ সুবিধার (ওয়ান টাইম এক্সিট) আওতায় ৩ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা সুদ মওকুফ করে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। সুদ মওকুফ পরবর্তী ৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করার শর্ত দেওয়া হয়। তাতে ব্যর্থ হয় এননটেক্স গ্রুপ। নতুন করে সুদ যোগ হয়ে এখন এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যাংকের পাওনা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯৬০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
ব্যাংকের সূত্র আরও জানিয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০২১ পর্যন্ত নিয়মিত ঋণের টাকা পরিশোধ করেছে এননটেকস গ্রুপ। ব্যাংক থেকে নেওয়া মোট ৪ হাজার ৮ শো ১৯ (৪৮১৯) কোটি টাকার মধ্যে ১ হাজার ৮ শো (১৮০০) কোটি টাকা পরিশোধ করেছে এননটেকস গ্রুপ। করোনা মহামারীতেও প্রতিষ্ঠানটির রপ্তানিমুখী বাণিজ্য সচল রেখেছিলো এননটেক্স গ্রুপ। কিন্তু পরবর্তীতে ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ডলার সংকটে কাঁচামাল আমদানি না করতে পারার প্রভাব পড়ে বিশ্বের অন্যান্য শিল্প বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের মতো এ প্রতিষ্ঠানটিতেও। এ বাস্তবতায় ঋণের টাকা আদায়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ সিদ্ধান্ত নেয়, সুদ মওকুফ বহাল রেখে আদায়যোগ্য দায় ৪ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা নির্ধারণ করে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেওয়ার।
ব্যাংক সূত্র বলছে, আশুলিয়া ও টঙ্গীর তুরাগ নদী সংলগ্ন প্রায় ১২৮ একর জমি ব্যাংকের কাছে বন্ধক রয়েছে। উত্তরা দিয়াবাড়ী মেট্রোরেল প্রকল্প, সম্প্রসারিত টঙ্গী মেট্রোরেল, বাস র্যাপিড ট্রানজিট, আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে, বিজিএমইএ এর ফ্যাশন ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস পাশ্ববর্তী হওয়ায় এননটেক্সের জমির দাম তারকেনা দামের পাঁচগুণ বেশি দামে এরই মধ্যে কেনার আগ্রহ দেখিয়েছে বেশ কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান।
এননটেক্স গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, ‘আমি জমি বিক্রি করে পুরো ঋণ শোধ করে দিতে চাই। জমিটি ভালো জায়গায় হওয়ায় অনেকেই কেনার আগ্রহ দেখাচ্ছে। ব্যাংকে শিগগিরই ৩০ কোটি টাকা জমা দিয়ে এই প্রক্রিয়া শুরু করবে। এতে ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য ভালো হবে, ব্যাংক-ঋণগ্রহীতা ও ক্রেতা উভয়ই লাভবান হবে-সেই সাথে দেশের অর্থনীতিও হবে সমৃদ্ধ।