বগুড়া প্রতিনিধি : ছাদ ফুটো করে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ৪ আসামি বগুড়া জেলা কারাগার থেকে পালিয়ে গিয়েছিলো বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী। তিনি জানান, পালিয়ে যাওয়া ৪ জনই বিভিন্ন হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
বুধবার (২৬ জুন) সকাল সোয়া ১০টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।
তিনি বলেন, ‘আসামিরা তাদের ব্যবহার করা বিছানার চাদরকে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে। সুযোগ মতো কারাগারের ছাদ ফুটো করে বাইরে বের হন তারা। এরপর কারাগারের সীমানা প্রাচীর টপকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে তারা পালিয়ে যায়।’
বগুড়ার এসপি বলেন, ‘পালিয়ে যাওয়ার পরপরই জেলা কারাগার থেকে আমাদের জানানো হয়। কারাগার থেকে তাদের ছবি দেওয়া হয় আমাদের। আমরা সেই অনুযায়ী রাতেই অভিযান শুরু করি। পরে ভোররাতে তাদের চাষীবাজার থেকে ফের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের জেলা ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হলে কারাগারের সুপার এসে তাদের শনাক্ত করেন।’
পুলিশ সুপার আরও বলেন, কারাগার পরিদর্শন করে দেখা গেছে, তারা ৪ জন একই সাথে একটি কক্ষে অবস্থান করতো। তারা পরিকল্পিতভাবে ছাদ ফুটো করে পরিধেয় বস্ত্র এবং বিছানার চাদর জোড়া দিয়ে রশি বানিয়ে দেওয়াল টপকিয়ে পালিয়ে করতোয়া নদী পার হয়ে পালিয়ে যায়।
সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, এই ঘটনায় একটি মামলা হবে। মামলায় তাদের ফের আদালতে তোলা হবে।
আসামিরা হলেন-কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী থানার দিয়াডাঙ্গা গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে নজরুল ইসলাম ওরফে মজনু ওরফে মঞ্জু (৬০), নরসিংদি জেলার মাধবদী থানার ফজরকান্দি গ্রামের মৃত ইসরাফিলের ছেলে আমির হামজা ওরফে আমির হোসেন (৪১), বগুড়া কাহালু উপজেলার উলট্ট গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে জাকারিয়া (৩৪) এবং বগুড়া সদরের কুটিরবাড়ি গ্রামের ইসরাইল শেখের ছেলে ফরিদ শেখ (৩০)।
৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি
বগুড়া কারাগারের ছাদ ফুটো করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৪ আসামি পালানোর ঘটনায় ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কমিটির প্রধান হলেন বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। কমিটিতে জেলা পুলিশ, গণপূর্ত অধিদপ্তর ও জেলা কারা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কি না এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।