নিউজ ডেস্ক : ব্যাপক বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বানভাসি এসব মানুষের উদ্ধার করে নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা, তাদের খাদ্য সহায়তা নিশ্চিতসহ সার্বিক সহযোগিতায় নিরলসভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) এক বিজ্ঞপ্তিতে বাহিনীটি জানায়, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সুনামগঞ্জ জেলা কমান্ড্যান্ট কার্যালয়ের প্রশিক্ষণ ব্যারাক, ডাইনিং রুম ও হল রুমে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে আশ্রয় নিয়েছেন ৫১০ জন। স্থানীয় প্রশাসন ও বাহিনীর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তাদের যাবতীয় প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা হচ্ছে। সুনামগঞ্জ জেলার স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে ৬০টি আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন আনসার-ভিডিপি সদস্য-সদস্যারা।
অপরদিকে, সিলেট জেলার ৪৭১টি আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিটিতে পাঁচজন করে আনসার-ভিডিপি সদস্য নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করছেন। তাছাড়া এ জেলার জৈন্তাপুর, কোম্পানিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও সদর উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রের ৫৫০ পরিবারকে জেলা আনসার ও ভিডিপির পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
বাহিনীর সদর দপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতোমধ্যে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
সবাইকে বন্যা মোকাবিলায় অকৃত্রিমভাবে কাজ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ কমান্ডার ও জেলা কমান্ড্যান্টরা ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড দলনেতা-দলনেত্রী, উপজেলা ও ইউনিয়ন আনসার কমান্ডার ও সহকারী আনসার কমান্ডারদের বন্যা মোকাবিলায় শুরু থেকেই সম্পৃক্ত করেছেন। তারা সম্মিলিতভাবে বন্যা দুর্গতদের তাদের গবাদি পশু ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পত্তিসহ নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরে সহায়তা করছেন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন। বন্যায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া মানুষদের নৌকা কিংবা ভেলা দিয়ে তাদের পরিবার-পরিজনসহ আনসার-ভিডিপি সদস্যরা নিয়ে আসছেন আশ্রয়কেন্দ্রে।
বন্যা দুর্গতদের জন্য বিভিন্ন সরকারি অফিস, স্থানীয় প্রশাসন ও এনজিওদের খাদ্য বিতরণ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে সহায়তা করছে আনসার-ভিডিপি সদস্য-সদস্যারা। নিজস্ব অর্থায়নেও তারা দুর্গতদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করছেন। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি বন্যার কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া মানুষদের নৌকায় করে খিচুড়ি, শুকনো খাবার ও পানিবাহিত রোগ মোকাবিলায় ওষুধ ও খাবার স্যালাইন পৌঁছে দিচ্ছেন বাহিনীর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সদস্য-সদস্যরা।
উল্লেখ্য, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সদর দপ্তরে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে, যেখান থেকে সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ, ব্যাটালিয়ন ও জেলা কমান্ড্যান্টের কার্যালয়ে স্থাপিত কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।