সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে পানি ধীরে কমায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। জেলা শহরের বেশিরভাগ জনবসতি ও সড়কে এখনো হাঁটু পানি। কোনো কোনো আবাসিক এলাকায় বাসিন্দাদের চলাচল করতে হচ্ছে নৌকায় করে।
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বৃষ্টির দাপট কমে সূর্য হাসে সুনামগঞ্জের আকাশে। রোদের দেখা মেলার পর থেকে উন্নতি ঘটতে থাকে বন্যা পরিস্থিতির। আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টি না হলে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা আর থাকবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পৌর শহরের নতুনপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুমা রানি বলেন, ‘নদীতে পানি কমেছে। তবে আমাদের বাড়িঘরে এখনও পানি। পানির জন্য ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া নেই, ঘুম নেই। ছোট বাচ্চাটা বন্যার পানিতে নেমে অসুস্থ হয়ে গেছে। ’
পৌর শহরের হালুয়ারঘাট এলাকার ব্যবসায়ী সাদিক হোসেন বলেন, ‘পানি অল্প অল্প করে কমছে। আমার দোকানের সব নষ্ট হয়ে গেছে। বৃষ্টি না দিয়ে যদি রোদ হতো তাহলে জিনিসপত্র রোদে শুকাতে পারতাম, কিন্তু সেই সুযোগও নাই।’
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘গত দুই দিন থেকে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় জেলার সব নদ নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। আবার যদি সুনামগঞ্জে ও ভারতে বৃষ্টিপাত হয় তাহলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে হতে পারে।’
আগামী কয়েকদিন বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে বলেও জানান এই কর্তকর্তা।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমার পানি ২০ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আজ শুক্রবার (২১ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের অধিকাংশ সড়ক ও বাসা বাড়ি থেকে নেমে গেছে বন্যার পানি। তবে এখনও প্লাবিত আছে শহর ও গ্রামের নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি-রাস্তাঘাট। আগামী ২৪ ঘণ্টা সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির পূর্বাভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জের হাওরের সড়কে পানি আটকে সিলেট অঞ্চলে বন্যা হচ্ছে কিনা, তা এই বর্ষাতেই খতিয়ে দেখা হবে। আগামী বছর যেন এই অঞ্চলের মানুষের বন্যাতে ভোগান্তি না হয়, সেজন্য দ্রুত প্রকল্প নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।