নিউজ ডেস্ক :
চলতি বছর লবণ উৎপাদনে অতীতের সব রেকর্ড পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। ঘূর্ণিঝড় রিমালের আগের দিন ২৫ মে পর্যন্ত দেশে ৬৩ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৪ লাখ ৩৭ হাজার টন লবণ উৎপাদন হয়েছে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এ তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, গত ২৬ মে পর্যন্ত দেশে লবণ উৎপাদনের মূল এলাকা কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীর নির্ধারিত অঞ্চলে ২৪ লাখ ৩৭ হাজার টন লবণ উৎপাদন হয়েছে। আগের বছরও লবণ উৎপাদন অতীতের সব হিসাব ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
প্রতিবছর ১৫ নভেম্বর থেকে ১৫ মে পর্যন্ত সময়কে লবণ মৌসুম ধরা হয়। তবে বৃষ্টিপাতের ওপর ভিত্তি করে মৌসুমের মেয়াদ বাড়ে বা কমে। লবণের এবারের উৎপাদন দেশের বার্ষিক চাহিদা পূরণ করবে বলে মনে করছে বিসিক। এতে করে এ বছর লবণ আমদানির প্রয়োজন হবে না বলেও আশা করা হচ্ছে।
কক্সবাজারস্থ বিসিক লবণ কেন্দ্রের উপমহাব্যবস্থাপক মো. জাফর ইকবাল ভূঁইয়া জানিয়েছেন, গত বছরের ৩০ অক্টোবর থেকে মৌসুমের লবণ উৎপাদন শুরু হয়েছিল। ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে লবণের মাঠ তলিয়ে যায়। এর আগে ২৫ মে পর্যন্ত ২৪ লাখ ৩৭ হাজার টন লবণ উৎপাদন হয়। যা কোনো এক মৌসুমে গত ৬৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২২-২৩ মৌসুমে আগের ৬২ বছরের রেকর্ড ভেঙে ২২ লাখ ৩৪ হাজার ৬৫৮ টন লবণ উৎপাদন হয়েছিল।
বিসিকের মাধ্যমে ১৯৬১ সাল থেকে দেশে পরিকল্পিতভাবে লবণ উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থিত বিসিকের লবণ শিল্পের উন্নয়ন কর্মসূচি কার্যালয়ের আওতাধীন ১২টি লবণ কেন্দ্রের মাধ্যমে কক্সবাজারের সব উপজেলায় এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে লবণ চাষের জন্য চাষিদের প্রশিক্ষণ, ঋণ দান এবং প্রযুক্তি সম্প্রসারণসহ সার্বিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, চলতি বছর লবণ উৎপাদন হয়েছে ৬৮ হাজার ৩৫৭ একর জমিতে। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ৬৬ হাজার ৪২৪ একরে। জমির পরিমাণ বাড়ার পাশাপাশি চলতি মৌসুমে চাষির সংখ্যাও এক হাজার ২২৮ জন বেড়ে হয়েছে ৪০ হাজার ৬৯৫ জনে। তবে বাড়তি লবণ উৎপাদনের কারণে মাঠ পর্যায়ে ক্রুড (অপরিশোধিত) লবণের দাম কমে মণপ্রতি নেমে এসেছে ৩১২ টাকায়। যদিও ২০২২-২৩ মৌসুমের একই সময়ে মাঠ পর্যায়ে ক্রুড লবণের মণপ্রতি দাম ছিল সর্বনিম্ন ৪২০ টাকা।
চলতি মৌসুমে দেশে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৫ লাখ ২৮ হাজার টন। মৌসুমের শুরুতে (নভেম্বরের মাঝামাঝি) বিরূপ আবহাওয়া, একাধিক ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়। ওই সময়ে সংকট এড়াতে বিশ্ববাজার থেকে এক লাখ টন লবণ আমদানির অনুমোদন দেয় বিসিক। তখন কৃষক পর্যায়ে মাঠ থেকে অপুষ্ট লবণ উত্তোলন হলেও পরবর্তীসময়ে তীব্র তাপপ্রবাহে ভালো মানের দানাদার লবণ উৎপাদন হয়েছে।