জুলাইয়ের প্রথমভাগে মধ্যমেয়াদি বন্যা হতে পারে

নিউজ ডেস্ক : দেশের অভ্যন্তরে ও উজানের ভারতের রাজ্যগুলোতে বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ায় জুলাইয়ের প্রথম ভাগে মধ্যমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এক্ষেত্রে বানের পানিতে প্লাবিত হতে পাবে উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল।

বর্তমানে মেঘনা বেসিনের নদ-নদীর পানি বাড়ছে। ব্রহ্মপুত্র বেসিনের নদ-পানিও বাড়তে পারে৷ এক্ষেত্রে বিপৎসীমার অতিক্রম করে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী সজল কুমার রায় জানিয়েছেন, আগামী তিন দিনে দেশের ভেতরে ও উজানে ভারতের রাজ্যগুলোতে অতিভারী বৃষ্টিপাতের আভাস রয়েছে৷ আর দেশের নদ-নদীর পানির সমতল বেশি বৃদ্ধি পায় ভারতের বৃষ্টিপাতের কারণে। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের শেষের দিকে ব্রহ্মপুত্র বেসিনের পারি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছতে পারে৷ আর মেঘনা বেসিনের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে৷ যেহেতু বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি ভারতে বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভর করে৷ তাই কেমন বৃষ্টি হবে তার ওপর নির্ভর করবে বড় বা দীর্ঘমেয়াদী বন্যা হবে কি-না৷ তবে আমরা মধ্যমেয়াদী বন্যার কথা বলতে পারি।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল আছে, যা বুধবার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। গঙ্গা নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, অপরদিকে পদ্মা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল পাচ্ছে, যা সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া মনু, খোয়াই ব্যতীত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি সমতলেও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে, এ সময়ে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীগুলোর পানি সমততে বৃদ্ধি পেতে পারে।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারা, পুরাতন-সুরমা, সারিগোয়াইন নদীগুলোর পানি সমতলে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

এদিকে ১০ দিনের পূর্বাভাসে পাউবো জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানির সমতল আগামী ৯ দিনে স্থিতিশীল ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌছাতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতলে সাত দিন স্থিতিশীলভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে আগামী ১০ দিনের মধ্যে গঙ্গা-পদ্মা অববাহিকায় পানি সমতলে বিপৎসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা নেই। ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর পানির সমতল আগামী ৩-৪ দিন স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী ৬ দিন স্থিতিশীলভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে আগামী ১০ দিনের মধ্যে ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর অববাহিকায় বিপৎসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা নেই।

পাউবো জানিয়েছে তাদের পর্যবেক্ষণের ১১০টি স্টেশনের মধ্যে রোববার পানির সমতল বেড়েছে ৬৬টিতে, কমেছে ৪৩টিতে। একটি স্টেশনের তথ্য পাওয়া যায়নি। কুশিয়ারার পানি মারকুলিতে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হচ্ছে ‌‘সুন্দরবনের মধু’
পরবর্তী নিবন্ধফের বাড়ছে সিলেট-সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি