কোটাবিরোধী আন্দোলন : আদেশ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

নিউজ ডেস্ক : সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। তবে আপিল বিভাগের এই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ লিখিত এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা ঝুলন্ত সিদ্ধান্ত মানছি না। আমাদের এক দফা দাবি, সংসদে আইন পাস করে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে শুধু পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) কোটা রেখে সব ধরনের বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করতে হবে।

এই দাবি নির্বাহী বিভাগ থেকে যতক্ষণ না পূরণ করা হবে, ততক্ষণ রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

আদালতের রায়ের সন্তুষ্ট‌ কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ে আমাদের আন্দোলন প্রভাবিত হবে না। তারা যতক্ষণ না পর্যন্ত একটা কমিশন গঠন করে আমাদের সব সরকারি চাকরিতে ৫ শতাংশ কোটা নিশ্চিত না করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ছি না। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই।’

আদালতের রায়ের সম্পর্কে আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘আদালতে রায় স্থগিত হলেও আমাদের আন্দোলন চলবে। কারণ যেকোনো সময় এটি আবার ফিরিয়ে আনা হতে পারে। আমরা চাই বিষয়টির চূড়ান্ত সমাধান। স্থগিত কোনো সমাধান হতে পারে না।’

দুপুরে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, আদালতের প্রতি সম্মান আছে। তবে স্থায়ী ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন আপাতত চলবে। এ সময় এক ঘণ্টা পর আপিল বিভাগের রায়ের ওপর প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এর আগে বুধবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের আপিল বিভাগ সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে। এদিন রায়ের সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি। সেই সঙ্গে তিনি জানান, এ বিষয়ে ৪ সপ্তাহ পর ফের শুনানি হবে।

এদিকে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

বুধবার (১০ জুলাই) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রতিবাদকারীরা চাইলে আদালতে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরিয়ে নিতে ভিসিদের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসরকারের অবস্থান কোটার বিপক্ষে: ওবায়দুল কাদের
পরবর্তী নিবন্ধদীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন সুবিধা নিশ্চিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং কমিউনিটি ব্যাংকে’র মধ্যে চুক্তি