নিউজ ডেস্ক : পতন শেষে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফিরেছে দেশের শেয়ারবাজার। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার দেশের শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়েছে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের গতি। এর মাধ্যমে ঈদের পর লেনদেন হওয়া ১২ কার্যদিবসের মধ্যে ১০ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকলো।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ৬১ পয়েন্ট। আর লেনদেন বেড়ে ৯০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর মাধ্যমে গত ১৩ মের পর ডিএসইতে ৯০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেনের দেখা মিললো। এমন লেনদেন বাড়ার দিনে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে তিনশোর অধিক প্রতিষ্ঠান।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়ছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। কিন্তু প্রথম ১৫ মিনিটের লেনদেনের পর থেকেই দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। এতে এক পর্যায়ে সবকটি মূল্য সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে।
অবশ্য সূচকের এই ঋণাত্মক প্রবণতা বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। বরং প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেন পর থেকেই একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। ফলে সবকটি সূচকের বড় উত্থান দিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৩০৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৯টি প্রতিষ্ঠানের। আর ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা ২০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততোটাই বেড়েছে। দিনের লেনদেনের বেশিরভাগ সময় এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দিনের সর্বোচ্চ দামে বিপুল পরিমাণ ক্রয় আদেশ আসে। বিপরীতে শূন্য হয়ে পড়ে বিক্রয় আদেশ ঘর। ফলে দিনের সর্বোচ্চ দামেই এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৬১ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৫৮ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২১৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৬৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিকে দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৯০৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭৭০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১৩৮ কোটি ৭ লাখ টাকা। লেনদেন শুধু আগের কার্যদিবসের তুলনায় বাড়েনি, চলতি বছরের ১৩ মে’র পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।
এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ২৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২২ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- স্যালভো কেমিক্যাল, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, লাভেলো আইসক্রিম, সোনালী পেপার, ফারইস্ট নিটিং, ই-জেনারেশন এবং রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২৪৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৭৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২১২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪২টির এবং ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৭৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।