রফতানি প্রণোদনা হ্রাস টেক্সটাইল খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে: বিটিএমএ

নিউজ ডেস্ক : রফতানি প্রণোদনা আরও কমানো সরকারের সিদ্ধান্ত দেশীয় টেক্সটাইল খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, এটা একটা ষড়যন্ত্র। এর মাধ্যমে আমাদের শিল্প খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।

শনিবার (৬ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিটিএমএ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মোহাম্মদ আলী। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিটিএমএর সহসভাপতি ফজলুল হক ও ফায়জুর রহমান।

বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি রফতানির বিপরীতে নতুন করে নগদ সহায়তা কমানোর আদেশ জারি করে। এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানাতে বিটিএমএ সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করে।

মোহাম্মদ আলী বলেন, রফতানি প্রণোদনা ক্রমান্বয়ে কমার কারণে প্রাথমিক বস্ত্র খাত আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাবে। তিনি বলেন. সরকারকে টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস সেক্টরের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি রোডম্যাপ প্রণয়ন করতে হবে যাতে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) ক্যাটাগরি থেকে স্নাতক হওয়ার পরেও দেশীয় শিল্প টিকে থাকতে পারে এবং ভালভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে কারণ অন্যান্য প্রতিযোগী দেশগুলো ইতিমধ্যে এই ধরনের পরিকল্পনা তৈরি করেছে।

উদাহরণস্বরূপ, ভারত ২০০৪ সালে এলডিসি গ্রুপ থেকে একটি উন্নয়নশীল দেশে স্নাতক হয়েছে এবং এখনও সরাসরি নগদ ভর্তুকির বিকল্প হিসেবে টেক্সটাইল এবং পোশাক খাতের বৃদ্ধির জন্য প্রচুর প্রণোদনা দিচ্ছে, বলেন তিনি।

বিটিএমএ সভাপতি বলেন, প্রতি অর্থবছরে বস্ত্র ও পোশাাক খাতে রফতানির বিপরীতে মাত্র ৮ হাজার কোটি টাকা নগদ প্রণোদনা দেয় সরকার। এটি দেশের প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার জাতীয় বাজেটের তুলনাই খুবই সামান্য। এর বিপরীতে বিপুল পরিমাণ রফতানি আয়ে অবদান রাখছে বস্ত্র ও পোশাক খাত। কিন্তু সম্প্রতি বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাতে রফতানির বিপরীতে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা ব্যাপকভাবে কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এটা বাস্তবায়িত হলে তা এ দুটি খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

তিনি বলেন, গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে জ্বালানি সংকটের কারণে স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে গত কয়েক মাস যাবত তীব্র গ্যাস সংকটের কারণে কারখানাগুলো তাদের উৎপাদন ক্ষমতার ৪০-৫০ শতাংশের বেশি ব্যবহার করতে পারছে না। ফলে সুতা ও কাপড় উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমেছে। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এতে প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে এ খাতের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা নষ্ট হচ্ছে। এর প্রভাব তৈরি পোশাক রফতানিতে দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে বস্ত্রশিল্পে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় বাজারও বিদেশিদের হাতে চলে যাচ্ছে।

বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এক কিলোগ্রাম সুতার উৎপাদন খরচের ব্যবধান ২২ সেন্ট কারণ ভারতীয় সুতা প্রস্তুতকারকরা উন্নয়নশীল দেশ হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্নভাবে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়। বাংলাদেশে প্রতিবছর সুতার মোট চাহিদার ১৩ শতাংশ আসে ভারত থেকে, বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপবিত্র আশুরা ১৭ জুলাই
পরবর্তী নিবন্ধচিকিৎসকদের সঙ্গে ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনের মতবিনিময় সভা