কক্সবাজার প্রতিনিধি : জুয়েলারি শিল্পের উন্নয়নে গোল্ড ডিলিং লাইসেন্স আইন জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন-বাজুসের নেতারা।
তারা বলেছেন, সারাদেশে অধিকাংশ জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের গোল্ড ডিলিং লাইসেন্স নেই।
ফলে অনেক জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আবার এই লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়নের সময় সারা দেশের জেলা প্রশাসনের কার্যালয়গুলোতে হয়রানির মুখে পড়তে হয় জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের। এল আর ফান্ডের নামে ডিসি অফিসগুলো ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বাড়তি অর্থ আদায় করছে। ক্ষেত্রবিশেষে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের হয়রানিও করা হচ্ছে।
শুক্রবার (১২ জুলাই) কক্সবাজারের একটি হোটেলে বাজুস আয়োজিত তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। বিশ্ব ব্যাংকের অ্যাকসিলারেটিং অ্যান্ড স্ট্রেংথেনিং স্কিলস ফর ইকোনমিক ট্রান্সফরমেশন (এএসএসইটি) প্রকল্পের আওতায় কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে সারাদেশের আট হাজার জনকে এই প্রশিক্ষণ প্রদান কর্মসূচি শুরু করেছে দেশের পণ্যভিত্তিক ঐতিহ্যবাহী সর্ববৃহৎ বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন-বাজুস। এরই অংশ হিসেবে গত ১০ জুলাই জুয়েলারি খাতের টপ ম্যানেজমেন্ট ট্রেনিং কোর্স শুরু হয়।
বাজুস আয়োজিত এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এএসএসইটি প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুর রহিম। বাজুস উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাজুসের সাবেক সভাপতি ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. দিলীপ কুমার রায়, বাজুসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন, কার্যনির্বাহী কমিটির আরেক সদস্য আনোয়ার হোসেন, এএসএসইটি প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করা হয়।
এর আগে তিন দিনের কর্মশালায় প্রশিক্ষণ দেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও গবেষক রাজু আহমেদ, আরএমজি অ্যান্ড টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিলের সিইও উইং কমান্ডার মো. জগলুল হায়দার, ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার দিলশাদ হোসেন দোদুল, আরণ্যক ফাউন্ডেশনের কমিউনিকেশন অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি লিড আরিফুর রহমান, অ্যাসিস্ট ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্সির কনসালট্যান্ট কায়সার হামিদ।
সমাপনী অনুষ্ঠানে এএসএসইটি প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুর রহিম বলেন, সরকার দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার জন্য এই প্রকল্প নিয়েছে। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য অদক্ষ শ্রমিকদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা। যুব সমাজকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা।
বাজুস মুখপাত্র ও সাবেক সভাপতি এবং কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, জুয়েলারি শিল্পের এক সময় সোনালী অতীত ছিল, তবে সরকারের অধিকতর পৃষ্ঠপোষকতা না থাকার কারণে আজ এ শিল্প বিলুপ্তির পথে। বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের দিক-নির্দেশনায় আমরা তা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। আমরা বাজুস প্রেসিডেন্টের দিক-নির্দেশনায় দেশে জুয়েলারি বিপ্লব ঘটাতে চাই এবং দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে চাই। আর গহনার আসল সৌন্দর্য হচ্ছে ডিজাইন, আমাদের দেশের কারিগররা এই ডিজাইনিংয়ে পিছিয়ে আছেন। এই প্রোজেক্টের আওতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে এগিয়ে যেতে চায় জুয়েলারি শিল্প।
বাজুসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, এই প্রশিক্ষণ জুয়েলারি শিল্পকে আরও উন্নত হতে সহায়তা করবে। ব্যবসা সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখবে।
বাজুসের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের স্বর্ণ শিল্পীদের কারিগরি দক্ষতা বৃদ্বির জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করতে হবে। আমরা যেন বিশ্ব বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক ডিজাইনের গহনা তৈরি করতে পারি।