নিউজ ডেস্ক :
ভারতীয় পাহাড়ি ঢল ও এক সপ্তাহের টানা ভারী বর্ষণের ফলে ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হয়েছে কুমিল্লা জেলা। এ বন্যায় মৎস্য ও কৃষিখাতে প্রায় ১২৫২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে জেলা মৎস্য অধিদফতর এবং জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। যা অতীতের যেকোনো ক্ষতিকে ছাড়িয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকালে কুমিল্লা মৎস্য অধিদফতর এবং কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কার্যালয় সূত্রে পৃথক দুটি প্রাথমিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
কুমিল্লা জেলা মৎস্য অধিদফতর জানিয়েছে, বন্যায় জেলা জুড়ে মৎস্য খাতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪০৪ কোটি টাকা। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ২৩০৪২ টি মৎস্য খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার আয়তন ৫৮৩৬ হেক্টর। জেলায় চিংড়ি খাতে ক্ষতির পরিমাণ ১০.২৮ মেট্রিক টন। মাছের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩৫৮ কোটি টাকা।
জেলায় মৎস্য খাতে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বুড়িচং উপজেলা। সেখানে খামারিদের প্রায় ৭৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন বলেন, এটি আমাদের প্রাথমিক তালিকা। আমরা সরকারি প্রণোদনা পেলেই ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে কাজ শুরু করবো।
এদিকে কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, জেলা জুড়ে চলমান বন্যায় ৬৩ হাজার ৭৯৪ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৮৪৮ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত এসব ফসলের মধ্যে রোপা আমন বীজতলা ৪ হাজার ৫১৫ হেক্টর ও ধান ২৩ হাজার ৩০৯ হেক্টর, খরিফ-২ শাকসবজি ২ হাজার ১৯ হেক্টর, রোপা আউশ ৩৩ হাজার ৫৮০ হেক্টর, বোনা আমন ৩৩৫ হেক্টর এবং ২১৬ হেক্টর আখ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এর মধ্যে ২০ হাজার ৬৪১ হেক্টর রোপা আমন, ১ হাজার ৬১৫ হেক্টর খরিফ শাকসবজি, ২০ হাজার হেক্টর রোপা আউশ এবং ১১ হেক্টর আখ ফসলের জমি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪০৪ হেক্টর খরিফ শাকসবজি, ১৩ হাজার ৪৩২ হেক্টর রোপা আউশ এবং ২০৫ হেক্টর আখ ফসলের জমি। এসব ফসলের মধ্যে ২২৩ কোটি ৪১ লাখ টাকার রোপা আমন বীজতলা, ২৬৯ কোটি ৯৮ লাখ ৪৩ হাজার টাকার রোপা আমন, ৪৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকার খরিফ শাকসবজি, ২৯৭ কোটি ৮৫ লাখ ৭২ হাজার টাকার রোপা আউশ এবং ৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকার আখ ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কুমিল্লার উপ-পরিচালক আইয়ুব মাহমুদ বলেন, বৃষ্টির পানি ও বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির এটি প্রাথমিক তালিকা। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরোও বাড়তে পারে। প্রতিদিনই বন্যার পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পরবর্তীতে জানানো হবে।
তিনি আরও বলেন, বন্যা পরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি জমি এবং কৃষকদের পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই করা হবে। সুত্র: বার্তা২৪