নিউজ ডেস্ক :
মাধ্যমিকে বিভাগ (মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসা) তুলে দিয়ে শুধু দশম শ্রেণির সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল নতুন কারিকুলামে। তবে সেই কারিকুলাম সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মাধ্যমিকে বিভাগ বাতিল হবে না। তবে দশম শ্রেণির সিলেবাসের ওপর পরীক্ষার সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়েছে।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মোছাম্মদ রহিমা আক্তার স্বাক্ষরিত পরিপত্র থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন শিক্ষাক্রমের কারণে চলতি বছর নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বিভাগ নির্বাচনের সুযোগ পায়নি। এই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা আগামী বছর দশম শ্রেণিতে বিভাগ নির্বাচনের সুযোগ পাবে। দুই বছরের জায়গায় এক বছরে তাদের সিলেবাস শেষ করার জন্য সিলেবাসও সংক্ষিপ্ত করা হবে। এ ছাড়া আগামী শিক্ষাবর্ষে সব শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে আনা হবে পরিমার্জন ও সংশোধন।
এতে আরও বলা হয়, ২০২৫ সালে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা (২০২৬ সালের অনুষ্ঠাতব্য পরীক্ষা) নেওয়ার লক্ষ্যে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা অব্যাহত রেখে পূর্বের জাতীয় শিক্ষাক্রম- ২০১২ এর আলোকে প্রণীত সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তকসমূহ (অর্থাৎ ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত পুস্তক) শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হবে।
আরও উল্লেখ করা হয়, জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুযায়ী প্রণীত শাখা- বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষাভিত্তিক এই পাঠ্যপুস্তকসমূহের একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা এক শিক্ষাবর্ষের মধ্যেই পাঠ্যসূচি সম্পন্ন করতে পারে। পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুসারে পরিচালিত হবে।
আদেশে বলা হয়, জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২ এর বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা তথা অংশীজনদের অভিমত, গবেষণা ও জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির ঘাটতি, পাঠ্য বিষয়বস্তু ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে অস্পষ্টতা ও নেতিবাচক ধারণা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার প্রকট অভাব ইত্যাদি নানাবিধ বাস্তব সমস্যা বিদ্যমান থাকায় উক্ত শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয় মর্মে প্রতীয়মান।
‘জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুসারে প্রণীত বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষাভিত্তিক এ পাঠ্যপুস্তকগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হবে, যেন শিক্ষার্থীরা এক শিক্ষাবর্ষের মধ্যেই পাঠ্যসূচিটি সম্পন্ন করতে পারে। পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুসারে পরিচালিত হবে।’
এতে আরও বলা হয়, যেসব শিক্ষার্থী ২০২৫ সালে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে, তাদের জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ এর আলোকে প্রণীত শাখা ও গুচ্ছভিত্তিক সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তকগুলো (২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত) প্রদান করা হবে। এসব শিক্ষার্থী নবম ও দশম শ্রেণি মিলিয়ে দুই শিক্ষাবর্ষে সম্পূর্ণ পাঠ্যসূচি শেষে ২০২৭ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শিক্ষাবিদ, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ, মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রশাসক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও অভিভাবক প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় ২০২৫ সালে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করা হবে, যা ২০২৬ সাল থেকে পরিপূর্ণরূপে কার্যকর করা হবে।