নিউজ ডেস্ক: জমি ও ফ্ল্যাটে বিনিয়োগের মাধ্যমে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা সাদা করার সুযোগ এবার বাতিল হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার সবুজ সংকেত দিলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে সুযোগ বন্ধ হলে টাকা পাচারের আশঙ্কা করছেন দুই খাতের উদ্যোক্তারা।
গত ২ সেপ্টেম্বর ১৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ বাতিল করে সরকার। কিন্তু জমি ও ফ্ল্যাটে বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় এবং বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন ওঠায় দুই খাতে বিনিয়োগের সুযোগ বাতিলের পথে হাঁটছে এনবিআর। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলছেন, জমি-ফ্ল্যাটে বিনিয়োগের সুযোগ রাখা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে এটি বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আবাসন খাতের সংগঠন রিহ্যাবের সহসভাপতি এম এ আউয়াল বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থ জমি ও অ্যাপার্টমেন্টে বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় এ খাতে প্রাণচাঞ্চল্য এসেছিল। এ সুযোগ বাতিল হলে খাতটি মুখ থুবড়ে পড়বে। টাকাও পাচার হয়ে যাবে।
এনবিআর সূত্র জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ১০ শতাংশ কর দিয়ে আয়কর রিটার্নে অপ্রদর্শিত নগদ অর্থ ও ব্যাংক আমানত প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বর্গমিটারপ্রতি নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে প্লট-ফ্ল্যাট প্রদর্শনের সুযোগও ছিল। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ওই অর্থবছর ১১ হাজার ৮৩৯ জন মোট ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বৈধ করেছেন, যা ছিল দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ কালো টাকা সাদা করার ঘটনা। এতে সরকার রাজস্ব পায় ২ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭ হাজার ৫৫ জন ব্যাংকে জমা বা নগদ ১৬ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা বৈধ করেছেন। বাকি টাকা জমি, ফ্ল্যাট বা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হয়। এর পরের বছর, অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছর সাদা করার ক্ষেত্রে সাড়া না পাওয়ায় এ সুবিধা বাতিল করা হয়।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিলে এনবিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৫ শতাংশ হারে আয়কর পরিশোধ করে অপ্রদর্শিত পরিসম্পদ প্রদর্শন করার বিধান অর্থ আইন-২০২৪ সালের মাধ্যমে সংযোজন করা হয়েছে। একজন নিয়মিত করদাতাকে তার আয়ের ওপর সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত আয়কর দিতে হয়। আর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে প্রদেয় করের ওপর আরও সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ হারে সারচার্জ দিতে হয়।
কিন্তু মাত্র ১৫ শতাংশ হারে কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়। তাই ন্যায়নিষ্ঠ ও সমতাভিত্তিক রাজস্ব ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এনবিআর ১৫ শতাংশ আয়কর পরিশোধ করে নগদ অর্থসহ অপ্রদর্শিত সমজাতীয় পরিসম্পদ প্রদর্শনের বিশেষ ব্যবস্থা-সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্ত কর হয়েছে।