নিউজ ডেস্ক :
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণ করেছে এক হাজার ৭৯০ কোটি টাকা। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে এই ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৯৯১ কোটি টাকা। সে হিসাবে গত বছরের একই মাসের চেয়ে কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণ কমেছে ২০১ কোটি বা ১০ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।
তবে কৃষি বিতরণ কমলেও ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন ব্যাংকাররা। তারা বলছেন, গত জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ব্যর্থ করতে শেখ হাসিনা সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে রাখে। সঙ্গে কারফিউ ও আন্দোলনের কারণে ব্যাংকিং কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে পড়ে। আর এসব কারণে অন্যান্য খাতের মতো কৃষি খাতেও ঋণ বিতরণ কমেছে। এখন পরিস্থিতির উন্নতি হওয়া ধীরে ধীরে এটি বাড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, কৃষি খাতে বিতরণকৃত মোট ঋণের পরিমাণ এখন ৫৬ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা। যার মধ্যে খেলাপি ঋণ ৪ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা বা বিতরণকৃত ঋণের ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে কৃষি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫২ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা। যার মধ্যে খেলাপি ঋণ ছিল ৪ হাজার ৪৪ কোটি টাকা। সে হিসাবে এবার কৃষিতে ঋণ ও খেলাপি দুটোই বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, দেশে খাদ্য চাহিদা পূরণে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষকদের জন্য ৩৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে ব্যাংকগুলো। এটি গত অর্থবছরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছর কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ছিল ৩৫ হাজার কোটি টাকা। যদিও ব্যাংকগুলো শেষমেশ ৩৭ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করেছে। মোট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০৬ দশমিক ১৫ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিতরণ করেছিল ৩২ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ১২ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা, বেসরকারি এবং বিদেশি বাণিজ্যিকগুলোর জন্য ২৫ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো বিতরণ করে ৫৭৮ কোটি বা লক্ষ্যমাত্রার ৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং বিদেশি ও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো এক হাজার ২১৩ কোটি বা লক্ষ্যমাত্রার ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ। কৃষি ও পল্লীঋণে সবচেয়ে বেশি বিতরণ করেছে বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। ব্যাংকটি এই সময়ের মধ্যে ঋণ বিতরণ করেছে ২৮৪ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসেই কৃষকরা ২ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকার ঋণ শোধ করেছেন। যা বিগত ২০২৩-২৪ বছরের একই সময়ে আদায় হয়েছিল ২ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। গত বছরের তুলনায় এবার একই সময়ের আদায় কমেছে ১৭৬ কোটি টাকা বা ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ কম।
কৃষিঋণের মধ্যে দুই ভাগে অর্থাৎ শস্য-ফার্ম (গবাদিপশু ও মৎস্য খামার) এবং নন ফার্ম খাতে ঋণ দেওয়া হয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে শস্যে ৭৩৪ কোটি, পোল্ট্রিতে ৪৭১ কোটি, মৎস্য খাতে ৩২৩ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। আর নন-ফার্মে ২৬৩ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।