জুলাই-সেপ্টেম্বরে সরকারের ব্যাংক ঋণ বেড়ে দ্বিগুণ

নিউজ ডেস্ক:

রাজস্ব আয় কম হওয়ায় চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, এসময় সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে বিভিন্ন মেয়াদি ট্রেজারি বিল ও বন্ড বিক্রির মাধ্যমে ৪৭ হাজার ২০৯ কোটি টাকা ধার করেছে।

গত অর্থবছরের একই সময় শেষে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে সরকারের ধার ছিল ২৪ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকারের ধার বেড়েছে প্রায় ৯৩ শতাংশ।

তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ধার নিয়ে মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করছে সরকার। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ধার পরিশোধ করা হয়েছে ৪২ হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময় শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ধার পরিশোধের পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময় শেষে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের নিট ধার ৪ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা বেড়েছে। গত অর্থবছরের একই সময় শেষে সরকারের ধার কমেছিল ৫ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কন্ট্রাকশনারি মানিটারি পলিসির অংশ হিসেবে বাজারে টাকার যোগান কমাচ্ছে। এই প্রক্রিয়াতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে লিকুইড মানি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ফেরানো হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের পদক্ষেপ ভালো ফল দেয়। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোতে রেপোর মাধ্যমে টাকা ধার দেয়ার দিনের সংখ্যা কমিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন সপ্তাহে দুই কার্যদিবস ব্যাংকগুলো রেপোর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার পায়; আগে সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসেই ধার দেয়া হতো।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, রাজস্ব আদায় টার্গেটের তুলনায় কম হলেও সরকারি কর্মচারীদের বেতন, ঋণের সুদসহ সরকারের অপারেটিং কস্ট মেটাতে ব্যাংক খাত থেকে ধার বাড়াতে হয়েছে। ব্যাংকগুলো কম সুদে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার নিয়ে ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেওয়া ধার নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, কোনো ব্যাংক তারলী সংকটে পড়লে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার নেবে। এখন এই ধারের টাকা দিয়ে তারা যদি ব্যবসা করে, তাহলে সেটি সমস্যা তৈরি করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এসব বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে হবে।

ব্যাংক খাত থেকে ধার কমাতে সরকারকে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে ও আয় বাড়াতে এক্সপেন্ডিচার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেভিনিউ মোবিলাইজেশন- এর প্রক্রিয়া সংস্কার করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএকদিনে ডেঙ্গুতে আরও ৩ মৃত্যু, শনাক্ত ১১৮৬
পরবর্তী নিবন্ধসমুদ্রবন্দরে লাইটার জাহাজ নিয়ন্ত্রণে নতুন সেল গঠন