নিউজ ডেস্ক :
দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বল জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন। তিনি বলেন, কেবল সরকারের আশায় না থেকে আমাদের সবার একত্রে কাজ করতে হবে। আমরাও প্রতিটি পরিস্থিতি থেকে শিখছি। কারণ সরকার চলমান নৈরাজ্য চায় না।
তিনি বলেন, আমাদের শ্রমিকের সংখ্যা অনেক বেশি। গুটিকয়েক যারা এই নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, তারা এটিকে একটি সফট টার্গেট হিসেবে নিয়েছে। কিন্তু আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। আপনাদের সহযোগিতায় যা আরও দ্রুত এবং সুন্দর হবে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘প্রাইভেট সেক্টর আউটলুক: প্রত্যাশা ও অগ্রাধিকার’ শীর্ষক বাণিজ্য সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সেখ বশির উদ্দিন বলেন, প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা। সরকার এই বিষয়ে অনেক বেশি সেনসিটিভ। এজন্য আমাদের সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।
শিল্পমালিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অনেক জায়গায় শিল্পমালিকরা সমস্যাগুলো থেকে পৃথক হয়ে যাচ্ছেন। আমি আপনাদের অনুরোধ করবো, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আপনারাও যুক্ত হন। আপনারা যখন সরে আসেন তখন আগুনে ঘি ঢালার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
এই উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে অনেক ব্যবসায়ী সংগঠন। এগুলোকে রেশনালাইজ করতে হবে। আমাদের এতগুলো মন্ত্রণালয়েরও দরকার নেই। এগুলোকে কমিয়ে আনা অথবা একত্রিত করা যেতে পারে। একই সঙ্গে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকেও কমিয়ে আনতে হবে অথবা মার্জ করতে হবে।
এলডিসি গ্রাজুয়েশন সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই এলডিসি গ্রাজুয়েশন করতে হবে। সেটা ২০২৬ না হয়ে ২০৩০ হতে পারে, সেটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু আমাদের গ্রাজুয়েট হতেই হবে। আমরা কি তৈরি? হয়তো না। কিন্তু আমরা কি হতে পারি? আমি মনে করি হ্যাঁ। যদি আমরা যথাযথ নীতি তৈরি করতে পারি তাহলে সম্ভব।
‘আজ হোক কাল হোক আমাদের বাণিজ্য উদার করতে হবে। আমরা যদি সাব-সেক্টরগুলো ভালোভাবে লক্ষ্য করি এবং পরিণামদর্শীভাবে নীতি নেওয়া শুরু করি তাহলে এটা সম্ভব। বিশ্ব বাংলাদেশকে রোল মডেল হিসেবে দেখতে চায়। আমাদের নিজেদের যোগ্যতা তৈরি করতে হবে। কারও পরিচয়ে নয়, নিজেদের জোরে কাজ করতে হবে।’
কর কাঠামো নিয়ে তিনি বলেন, যথাযথ কর কাঠামো নিতে হবে। কারণ সরকারের খরচ করার জন্য টাকা দরকার।
অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি এবং আম্বার গ্রুপের চেয়ারম্যান শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ব্যাংকিং খাতকে চ্যানেলাইজড করতে হবে। যারা ব্যাংক লুট করেছে তাদের ভর্তুকি আমরা দেবো কেন? গত ১৫ বছরে যারা অডিট করেছে তাদের কারও সাজা হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজনকেও এখনো জবাবদিহির আওতায় আনা হয়নি।
ব্যবসার উন্নয়নে পলিসি ঠিক করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এখন এমন পলিসি হচ্ছে যার ফলে শিল্প উন্নতি করতে পারছে না। দেশের গ্যাসের দাম ৮-১০ টাকা, যা আমদানি করলে হয় ১৬ টাকা, কিন্তু সরকার রাখছে ৩০ টাকা। এভাবে চলতে থাকলে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা মাঠে মারা যাবে।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আইনশৃঙ্খলা ঠিক করতে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে। নতুন এক সমস্যার নাম মামলা বাণিজ্য। এটির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এখন আমাদের পলিসি সাপোর্ট প্রয়োজন। তাহলেই ব্যবসা এগিয়ে যাবে।
এলডিসি গ্রাজুয়েশন লক্ষ্যমাত্রা স্থগিতের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এলডিসি গ্রাজুয়েশন অবিলম্বে স্থগিত করা হোক। আমরা বেঁচে থাকার সংগ্রামে আছি। তাই এটি স্থগিত করা প্রয়োজন।