নিউজ ডেস্ক :
দিন যত যাচ্ছে দেশের শেয়ারবাজারে দরপতনের মাত্রা ততো বাড়ছে। একই সঙ্গে দেখা যাচ্ছে লেনদেন খরা। লেনদেনের গতি ধারাবাকিভাবে কমে প্রায় দেড় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। টানা পতন হচ্ছে মূল্যসূচকেরও। ফলে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা দিন দিন ভারীই হচ্ছে।
গত কয়েকটি কার্যদিবসের মতো চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববারও (২৪ নভেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। কমেছে সবকটি মূল্যসূচকও। বাজারটিতে গত ২৭ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। এর মাধ্যমে টানা ছয় কার্যদিবসেই উভয় শেয়ারবাজারে দাম কমার তালিকায় নামে লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান।
এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের প্রতিটিতেই লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে। এতে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১১ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা। আর প্রধান মূল্যসূচক কমে ১৫৭ পয়েন্ট।
এ পরিস্থিতিতে রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৩০ পয়েন্ট কমে যায়। শুরুর এই পতনের ধারা লেনদেনের পুরো সময়জুড়েই অব্যাহত থাকে। এমনকি শেষ দিকে পতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১১০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২২৮টির আর ৫৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৪৬ পয়েন্টে নেমে গেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৪৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯৯ পয়েন্টে নেমে গেছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩০২ কোটি ৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৬৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৬১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত ১৬ অক্টোবরের পর ডিএসইতে সবচেয়ে কম লেনদেন হলো।
এই লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে এনআরবি ব্যাংকের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৯৯ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের ১২ কোটি ২১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফাইন ফুডস।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জেনেক্স ইনফোসিস, বিচ হ্যাচারি, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, অগ্নি সিস্টেম এবং সোনালী আঁশ।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৬৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৩টির এবং ৩১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।