আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকা এবং তেলের দাম কমে যাওয়ার প্রেক্ষিতে ২০২৫-২০২৬ সাল নাগাদ বিশ্বব্যাপী ভোগ্যপণ্যের দাম কমবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০২৪ সালে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি যেখানে ৮০ মার্কিন ডলার রয়েছে, সেখানে ২০২৫ সালে এর মূল্য হবে ৭৩ মার্কিন ডলার এবং ২০২৬ সালে এর মূল্য কমে এসে দাঁড়াবে ব্যারেল প্রতি ৭২ মার্কিন ডলারে।
রোববার (৩ নভেম্বর) বিশ্বব্যাংকের বরাত দিয়ে ভারতের অর্থনীতিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম ইকোনমিকস টাইমস এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, ধাতব এবং কৃষিপণ্যের দাম কিছুটা বৃদ্ধি বা কমে এসে একটা স্থিতাবস্থায় এসে দাঁড়াবে বলে বিশ্বব্যাংক মন্তব্য করেছে।
বিশ্বব্যাংকের অক্টোবরের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৫ সালে ৫ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম আরো ২ শতাংশ কমবে। তবে এই বছরে কমবে ৩ শতাংশ, যা ২০২০ সালের মূল্যের সমান।
এর কারণ হিসেবে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য হ্রাসের প্রেক্ষিতে ভোগ্যপণ্যের দাম কমবে। তবে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়লেও ধাতব ও কৃষিজ পণ্যের দামে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে।
বিশ্বব্যাংকের মতে, চীনের বহুমুখী তেল উৎপাদনসহ বিভিন্ন ওপেকভুক্ত দেশের তেল উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম কমে আসবে। তবে এটাও আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের বিস্তৃতি ঘটলে সাময়িক সময়ের জন্য তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে। এর প্রভাব আন্তর্জাতিক বাজারেও পড়তে পারে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ছিল ৯০ মার্কিন ডলার। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের অস্থিরতার কারণে তেল দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে ধাতব পদার্থের মূল্য আনুপাতিক হারে স্থিতাবস্থায় ছিল। ২০২৫ সালেও তা স্থিতিশীল থাকার পর ২০২৬ সালে তা আরো ৩ শতাংশ কমে আসবে।
ধাতব বাজার:
বিশ্বব্যাংক জানাচ্ছে, বিশ্বব্যাপী শিল্পায়নের গতি বৃদ্ধির জন্য অ্যালুমিনিয়াম ও তামার দাম কমবে। তবে ২০২৪ সালে স্বর্ণের দাম তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভূরাজনৈতিক ও চাহিদা বৃদ্ধির কারণে স্বর্ণের মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা ঘটেছে।
কৃষিপণ্যের বাজার:
কৃষিপণ্যের বিষয়ে বিশ্বব্যাংক জানাচ্ছে, আবহাওয়া কৃষির অনুকূলে থাকায় কৃষিক্ষেত্রে এর সুফল পাওয়া গেছে। এ কারণে কৃষিপণ্যের দাম আরো কমে আসবে।
ভোগ্যপণ্যের দাম কখনো কিছুটা বাড়তেও পারে আবার তা কমেও আসার সম্ভাবনা রয়েছে। চীনের পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার প্রভাবে কারণে ভোগ্যপণ্যের মূল্যের হ্রাস-বৃদ্ধির ঘটনা ঘটতে পারে।
ওপেক+ (অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ প্লাস) এবং ওপেকভুক্ত নয় এমন দেশ যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের তেল উৎপাদনে হ্রাসের সম্ভাবনা না থাকায় ২০২৬ সাল নাগাদ ভোগ্যপণ্যের মূল্য হ্রাস অব্যাহত থাকবে।