দেশীয় প্রযুক্তিতে চিলার প্রস্তুত করছে কুলিং পয়েন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং

নিউজ ডেস্ক:
সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে চিলার উৎপাদন করছে ‘কুলিং পয়েন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস’। মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের খাসের চরে ২৬ শতক জমিতে গড়ে উঠেছে চিলার উৎপাদকারী প্রতিষ্ঠানটি।

ধল্লা ইউনিয়ন পরিষদ ও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অবস্থানগত ছাড়পত্র, ফায়ার লাইসেন্স, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কর্তৃক সেফটি অডিট সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তী সময়ে ইন্টারন্যাশনাল সেফটি অডিটর (ইউএনডিপি) এর অডিটের মাধ্যমে কমিশনিং ও সেফটি সার্টিফিকেট পায়। সরেজমিনে ফ্যাক্টরি পরিদর্শনের মাধ্যমে ‘বিএসটিআই’ চিলার উৎপাদনের ছাড়পত্রও পায় প্রতিষ্ঠানটি।

কুলিং পয়েন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস এর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ২০০৫ সাল থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের ‘আরএসি’ টেকনিশিয়ানদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও পরিবেশ সম্মত কাজের দক্ষতা বাড়াতে মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে কাজ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশব্যাপী প্রায় ১২ হাজার টেকনিশিয়ানকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এছাড়া, ‘গিজ’এর আওতায় ন্যাচারাল রেফ্রিজারেন্ট আর-২৯০ ব্যবহারে টেকনিশিয়ানদেরও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।

কুলিং পয়েন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেসের উৎপাদিত চিলারগুলো শতভাগ পরিবেশসম্মত দাবি করে আসাদুজ্জামান বলেন, কুলিং পয়েন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেসের আধুনিক ফ্যাক্টরি নির্মাণে নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। একই সঙ্গে ইউএনডিপ-র প্রোজেক্ট শর্ত মোতাবেক পাঁচটি মাইলস্টোন এর মাধ্যমে আনুমানিক ৫৯ লাখ টাকা দেওয়ার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে যা এখনও চলমান।

এদিকে, জুলাই অভুত্থানের পর গেলো ৯ আগস্ট রাতে একদল দুষ্কৃতকারী ফ্যাক্টরির প্রধান ফটক ভাঙচুর করে উৎপাদনের ব্যবহারিত কন্ডেন্সার, কম্প্রেসর, কপার টিউব, রেফ্রিজারেন্ট সিলিন্ডারসহ যাবতীয় কাঁচামাল ও উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় মেশিনারিজ লুট করে।

ফ্যক্টরির এক প্রহরী জানান, ঘটনার দিন রাতে একদল দুষ্কৃতকারী আচমকা হামলা ও ভাঙচুর করে সব মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। তাদের হাতে দেশীয় অস্ত্রসহ হঠাৎ হামলা হওয়াতে প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়নি।

আসাদুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর বিভিন্ন নাম্বার থেকে টেলিফোনে হুমকি প্রদান করে আমাকে। যার প্রেক্ষিতে বেশকিছুদিন স্বাভাবিক কাজ-কর্ম বন্ধ রাখা হয়।

কুলিং পয়েন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেসের উৎপাদন চলমান রাখার লক্ষ্য নতুনভাবে মেশিনারিজ সংগ্রহ করে কাজ চালু করা হয়েছে। যা দেশিয় শিল্প বিকাশে প্রশংসার দাবি রাখে।

মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, আমি ১৯৯৪ সাল থেকে সুনামের সঙ্গে বাংলাদেশে রিফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং সেক্টরে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। ব্যবসায়িক জীবনের শুরুতেই রিফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং মেশিন সার্ভিসের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। পরবর্তী সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন পোল্ট্রি হ্যাচারিতে কাজ করার সুবাদে দেশীয় প্রযুক্তিতে চিলার প্রস্তুত করার সক্ষমতা অর্জন করি।

তিনি বলেন, কুলিং পয়েন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেসের স্বত্বাধিকারী হিসাবে বাংলাদেশ সরকারের নীতিমালা মেনে রিফ্রিজারেন্ট গ্যাস আমদানি করি। যে তথ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে রক্ষিত রয়েছে। আমার প্রতিষ্ঠান রিফ্রিজারেন্ট খুচরা বিক্রির প্রতিষ্ঠান নয়।

দেশীয় প্রযুক্তিতে চিলার উৎপাদন প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বুয়েট অধ্যাপক ড. মো. আলী আহম্মদ শওকত চৌধুরী বলেন, কুলিং পয়েন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস যে চিলার উৎপাদন করছে তার গুণগত মান ঠিক আছে। এটি উৎপাদন খুব জটিল প্রক্রিয়া না। তারা স্যামপল যেগুলো উৎপাদন করেছিল, আমরা যা দেখেছি তাতে কোনো সমস্যা দেখতে পাওয়া যায়নি। উৎপাদনের জন্য যে মেশিনারিজ প্রয়োজন তার একটি তালিকা এবং ফ্যাক্টরি ফায়ার এক্সজিস্ট রিকয়্যারমেন্ট দিয়েছিলাম।

তিনি আরও বলেন, আসাদুজ্জামান সব মেশিনারিজ স্থাপনের পর দেশে ক্ষমতা পট পরিবর্তসের অবস্থাতে সেখানে লুট হয়। এতে তার ফ্যাক্টরির একটা বড় ক্ষতি হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসপ্তাহজুড়ে প্রাইম ফাইন্যান্স ফান্ডের সর্বোচ্চ দরপতন
পরবর্তী নিবন্ধবাণিজ্যমেলায় বিদেশিরা শুধুমাত্র মনোহারী পণ্য নিয়ে আসেন: উপদেষ্টা