
নিউজ ডেস্ক:
এক কার্যদিবস পর দেশের শেয়ারবাজারে আবার দরপতন হয়েছে। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে কমেছে মূল্যসূচক।
মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। চলতি বছর এত লেনদেন আগে আর হয়নি। এর মাধ্যমে প্রায় সাড়ে তিন মাসের মধ্যে ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।
ডিএসইতে দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকলেও অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এরপরও এ বাজারটিতেও কমেছে মূল্যসূচক। তবে ডিএসইর মতো বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। তার আগের সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। টানা দুই সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। দ্বিতীয় কার্যদিবসে আবার ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে।
এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। কিন্তু লেনদেনের শেষদিকে দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। ফলে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ১৩৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২০৩টির। এছাড়া ৫৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২০৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৪০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৬০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯২২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৯৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৪৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১৫৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত বছরের ৬ নভেম্বরের পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে রবির শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ৩২ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ১৬ টাকার। ১৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- পেপার প্রসেসিং, গ্রামীণফোন, আরডি ফুড, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, বিচ হ্যাচারি এবং মিডল্যান্ড ব্যাংক।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮১টির এবং ৪০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২ কোটি ৯১ লাখ টাকা।