এক বছরে আমানত বেড়েছে ৪.৬৯ শতাংশ

নিউজ ডেস্ক:

ব্যাংকে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের ব্যাংক হিসাব এবং আমানতের স্থিতি বেড়েছে। সেই সাথে বড় আমানতকারীদের (কোটিপতি) ব্যাংক হিসাবের সংখ্যাও বেড়েছে। এক বছরের ব্যবধানে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের ব্যাংক হিসাবে জমা বেড়েছে ২২০ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সুবিধা দিতে ১০, ৫০ ও ১০০ টাকার ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দেয় সরকার। এসব হিসাবকে নো ফ্রিলস অ্যাকাউন্ট (এনএফএ) বলা হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বর শেষে স্বল্প আয়ের মানুষের ব্যাংক হিসাবে আমানত বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। যা তার আগের বছরের একই সময়ে (ডিসেম্বর, ২০২৩) এর পরিমাণ ছিল চার হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের ব্যাংক হিসাবে জমা বেড়েছে ২২০ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। যদিও স্কুল ব্যাংকিং এবং কর্মজীবী শিশুদের অ্যাকাউন্ট এসব হিসাবের বাইরে।

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সুবিধা দিতে ২০১০ সালে প্রথম বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে নো ফ্রিলস অ্যাকাউন্ট খোলা। এসব অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালান্স বা সার্ভিস চার্জ বা ফি নেই। কৃষকের পাশাপাশি এসব হিসাবের আওতায় আছেন- পোশাক শ্রমিক, অতিদরিদ্র মানুষ, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুবিধাভোগীসহ অনেকে। যাদের মধ্যে কৃষকদের হিসাব এবং আমানত সবচেয়ে বেশি। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের আর্থিক সেবা নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগের অংশ হিসেবে এসব অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। এতে তারা সহজেই ব্যাংক লেনদেন করতে পারছেন তারা। সুবিধা অনুযায়ী তাদের টাকা জমা বা উত্তোলনকে সহজ করে তুলেছে এ সেবা।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের পট পরিবর্তনের পর সংকট কাটতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে কমেছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি। পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতের ওপর আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। এসব কারণে স্বল্প আয়ের মানুষ এখন ব্যাংকে টাকা রাখছেন। অন্যদিকে, ব্যাংকগুলোকে ঠিক করতে বাংলাদেশ ব্যাংকও বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এসব কারণে আমানত ফিরছে ব্যাংকে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ১০, ৫০ ও ১০০ টাকা দিয়ে খোলা স্বল্প আয়ের মানুষের ব্যাংক হিসাবে আমানতের পরিমাণ ছিল চার হাজার ২৮২ কোটি টাকা। আর ডিসেম্বর শেষে এসব হিসাবে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে ১০, ৫০ ও ১০০ টাকা দিয়ে খোলা হিসাবে আমানত বেড়েছে ৪০৩ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ।

গত বছরের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে ব্যাংকগুলোতে নো ফ্রিল অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৭৮ লাখ ৭১ হাজার ৮৭৮টি। এর পরের প্রান্তিক ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে স্বল্প আয়ের মানুষের অ্যাকাউন্ট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৮১ লাখ ২৩ হাজার ৩৯০টিতে। তিন মাসের ব্যবধানে অ্যাকাউন্ট সংখ্যা বেড়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৫১২টি। ডিসেম্বর শেষে এসব হিসাবের মাধ্যমে আসা মোট প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স আয়ের পরিমাণ ছিল ৭৭২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, যা তার আগের প্রানিস্তক সেপ্টেম্বরের রেমিট্যান্সের তুলনায় ৬ দশমিক ১৬ শতাংশ বেশি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভারত থেকে পোশাকের আমদানি কমেছে
পরবর্তী নিবন্ধগণমাধ্যমকে পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ সংস্কার কমিশনের