
ক্রীড়া ডেস্ক:
বাংলাদেশের ক্রিকেটে স্মরণীয় এক ব্যক্তিত্ব মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি – তিন ফরম্যাটেই সমান পদচারণা ছিল তার। বাংলাদেশের অনেক সাফল্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই অলরাউন্ডারের নাম।
কখনো বড় ইনিংস খেলে, কখনো ছোট ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে অনেক ম্যাচে সাফল্য এনে দিয়েছেন তিনি। যে কারণে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বলা হয় ‘সাইলেন্ট কিলার’ বা নীরব ঘাতক। কারণ, তার ইনিংসগুলোই প্রতিপক্ষের সঙ্গে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে অনেক ম্যাচে।
তবে খুব ইন্টরেস্টিংলি, ২০২১ সালের পর থেকে মাহমুদউল্লাহর নামের পাশে জুড়ে যায় ‘পেইন কিলার’ উপাধিও। সেবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে স্কটল্যান্ডের কাছে হারের পর তুমুল সমালোচনার শিকার হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এমনকি ওই হারের কারণে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন তৎকালীন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানও।
এরপর পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়ে বাংলাদেশ দল চূড়ান্ত পর্বে কোনোমতে জায়গা করে নেয়। এরপরই সংবাদ সম্মেলনে এসে সমালোচনার কারণে ক্ষুব্ধ মাহমুদউল্লাহ যেন ক্ষোভ উগড়ে দিলেন। তখন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদই। সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘সবারই ব্যথা থাকে, কারও অনেক ইনজুরি থাকে, ওইগুলো নিয়েই আমরা খেলি। দিনের পর দিন পেইন কিলার খেয়েই আমরা খেলি। হয়তো বিহাইন্ড দা সিন অনেকে এইগুলো জানে না। কাজেই নিবেদন নিয়ে কথা বলা ঠিক নয়।’
সেই থেকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নামের পাশে ঠাট্টাচ্ছলে ‘পেইন কিলার’ যোগ করে দেন সমালোচনাকারীরা। বিশেষ করে গত কয়েকবছর যখনই তার ফর্ম পড়তির দিকে থাকে, তখনই সমালোচকরা ‘পেইন কিলার’ উপাধিটা টেনে আনেন। গত সপ্তাহে মাহমুদউল্লাহর ভায়রা ভাই মুশফিকুর রহিম অবসর নেয়ার পরও এই ‘পেইন কিলার’ শব্দজোড়া আলোচনায় আসে। তার স্ত্রী দাবি করেছিলেন, তার স্বামী নাকি কোনো এক ম্যাচের আগে ২০টি পেইন কিলার খেয়েছিলেন!
তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অবসরের পরই ‘পেইন কিলার’ শব্দযুগল আবারও আলোচনায় এসেছে মূলত তার তরুণ সতীর্থ তাওহিদ হৃদয়ের স্ট্যাটাস থেকে। শুভ কামনা জানাতে গিয়েই রিয়াদের নামের পাশে ‘পেইন কিলার’ লিখেছেন হৃদয়। ফেসবুকে দেয়া পোস্টে তিনি লিখেন, ‘ছোটবেলায় টিভির সামনে বসে দেখা প্রত্যেকটা ব্রিলিয়ান্ট মুহূর্তের জন্য ধন্যবাদ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভাই। সবাই আপনাকে সাইলেন্ট কিলার ডাকলেও, আমাদের বন্ধুমহলে আপনার নাম ছিল ‘‘পেইন-কিলার’’। এমন অনেক ম্যাচ আছে যেগুলোর শেষ মুহূর্তের রিলিফ আপনার থেকে উপহার পেয়েছি। আমার দোয়ায় থাকবেন আপনি, যেমনটি সবসময় ছিলেন, অবসর জীবনের জন্য শুভকামনা!!’
তবে, তাহওহিদ হৃদয় এখানে ‘পেইন কিলার’ বলতে নেতিবাচক কিছু বোঝাননি। তিনি মূলত বোঝাতে চেয়েছেন, ছোট বেলায় বন্ধুদের সঙ্গে টিভির সামনে বাংলাদেশ দলের খেলা দেখতে বসলে, ক্রিকেটারদের সংগ্রাম করতে দেখা ছিল তাদের জন্য একটা ‘পেইন’। মাহমুদউল্লাহ ব্যাট করতে নেমে সেই পেইন থেকে তাদেরকে মুক্তি দিতেন বা পেইন কিল করতেন। সে কারণেই তারা মাহমুদউল্লাহকে ‘পেইন কিলার’ বলতেন।