
নিউজ ডেস্ক
পুরাতন জরাজীর্ণ-গ্লানিকে পিছনে ফেলে বছর ঘুরে আবারও বৈশাখ এলো দ্বারে। নতুন বছর, নতুন ভোর, নতুন আশা- সব নতুনের আহ্বানে এলো ১৪৩২; বাংলা নববর্ষ।
বৈশাখের প্রথম দিনটি বাঙালির হৃদয়কে করে তোলে প্রফুল্ল। তাই তো নববর্ষকে বরণ করে নিতে নানা প্রস্তুতি ঘরে ঘরে।
জুলাই অভ্যুত্থানের এক অস্থির সময় পেরিয়ে এলো পহেলা বৈশাখ। মূলত রমনায় ছায়ানটের বর্ষবরণের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শোভাযাত্রাসহ মেলা, পান্তা-ইলিশের আয়োজন নববর্ষের মূল আকর্ষণ।
বর্ণাঢ্য কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপিত হবে। উৎসবমুখর পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সার্বিক প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।
‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে সকাল ৯টায় ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ বের করা হবে। মঙ্গল শোভাযাত্রা থেকে এবার নাম হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।
শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র, দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা শুধু নীলক্ষেত ও পলাশী মোড় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন।
লোক-ঐতিহ্য ও ২৪ এর চেতনাকে ধারণ করে আরও বড় পরিসরে এবং বৈচিত্র্যপূর্ণভাবে এ বছর শোভাযাত্রায় সর্বজনীন অংশগ্রহণের আয়োজন করা হয়েছে। শোভাযাত্রায় এ বছর ২৮টি জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন দেশের অতিথিরা অংশ নেবেন। বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় থাকবে সাতটি বড় মোটিফ, সাতটি মাঝারি মোটিফ ও সাতটি ছোট মোটিফ।
বছর ঘুরে আবারো এলো বাঙালির প্রাণের উৎসব – বাংলা নববর্ষ। এই উৎসব বাঙালি ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সম্প্রীতির এক অপূর্ব মিলনমেলার প্রতিচ্ছবি।
নববর্ষের দিনটিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে দেশীয় ঐতিহ্যের বৈশাখীমেলা, পান্তা-ইলিশের আয়োজন, চড়ুই ভাতি, বায়োস্কোপ, হাওয়াই মিঠাইসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় খাবারের আয়োজন করা হয়।
বাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবার পান্তা-ইলিশ, ইলিশ পোলাও, ইলিশ খিচুড়ির পাশাপাশি রকমারি ভর্তা, পিঠা-পুলি, নলডা, মালপোয়া, নিমকি, চিনি ও গুড়ের মুড়ালি, কদমা/তিলা, চিনির হাতি ঘোড়া, মুড়ির মোয়া, নাড়ু, জুস, কুলফি মালাই, হাওয়াই মিঠাইয়ের আয়োজন থাকে।
এক তারা কিংবা ঢোলের তালে আধুনিকতার নানান অনুষঙ্গ মিলে বাঙালি ঐতিহ্যের এক অভূতপূর্ব মেলবন্ধন ঘটে যায় পহেলা বৈশাখে। আর তা গোটা পৃথিবীর বাঙালিকে এক করে।