বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে আরও শত পণ্যে শুল্ক সুবিধা

নিউজ ডেস্ক:
বর্তমানে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ১৯০টি পণ্যের ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা রয়েছে। দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে আরও ১০০ পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার চিন্তাভাবনা করছে অন্তর্বর্তী সরকার।

সোমবার বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশীর উদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ারের কাছে এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছেন।

এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যে অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা প্রত্যাহার করেছে, তারপর থেকে বাংলাদেশের সব রপ্তানি পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। অন্যদিকে আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর গড়ে ৬ দশমিক ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করছি।

এছাড়া কাঁচা তুলা ও লোহার স্ক্র্যাপের ক্ষেত্রে আমাদের শুল্কহার যথাক্রমে শূন্য ও ১ শতাংশ।

বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় তুলা আমদানিকারক দেশ, যা দিয়ে তৈরি পোশাকশিল্প চালিত হয়। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের পণ্যগুলোর ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের শুল্ক তালিকায় ১৯০টি পণ্যের ওপর শূন্য শুল্ক রয়েছে এবং আরও ১০০টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার চিন্তাভাবনা চলছে।

২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম অ্যাগ্রিমেন্ট অনুযায়ী, উভয় দেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পথে প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে তা যৌথভাবে দূর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ সবসময় গঠনমূলক সংলাপ ও সহযোগিতায় বিশ্বাসী এবং যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিতে যদি কোনো বাধা থাকে, তা দূর করতে প্রস্তুত। এ বিষয়ে ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের বাণিজ্য শাখার সঙ্গে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণে একমত হয়েছি।

বাংলাদেশ সরকার শুল্কহার কমানো, সব ধরনের অশুল্ক বাধা দূর করা এবং পারস্পরিক বাণিজ্যকে আরও লাভজনক করতে বিভিন্ন সংস্কারমূলক উদ্যোগ নিয়েছে। এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে- আমদানিনীতির হালনাগাদ, কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণ, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ, ট্রেডমার্ক ও পেটেন্ট সুরক্ষা ইত্যাদি।

এছাড়া আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি চুক্তি, মার্কিন অটো নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব, বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে সয়াবিন, গম, তুলা ইত্যাদি বড় আকারে আমদানির উদ্যোগ এবং মার্কিন প্রাইভেট ইক্যুইটি ফান্ডকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও অন্যান্য সেবামূলক খাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে যাচ্ছি।

আমার বিশ্বাস, এ উদ্যোগসমূহ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ভারসাম্য আনতে এবং উভয় দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক হবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস এবং তার সরকারসহ আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনার দপ্তরের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক আরও মজবুত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এ চিঠি দেওয়ার পর উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের চারটি মৌলিক পণ্য আছে, যার দ্বারা ৭৫ শতাংশ ব্যবসা হচ্ছে। সেগুলো কাঁচা তুলা, স্ক্র্যাপ, সয়াবিন ও পেট্রোলিয়াম পণ্য। বাংলাদেশে অন্যান্য পণ্য রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র কোন কোন ধরনের ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ ব্যারিয়ার ফেস করছে, সেগুলো জেনে আমরা ব্যবস্থা নেবো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১৩ এপ্রিল পার্বত্য ৩ জেলায় ব্যাংক বন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধলাভেলোর উদ্যোক্তা পরিচালকের শেয়ার হস্তান্তর