নতুন আমদানি নীতি,চিংড়ি, ঘন চিনিসহ ২৬ শ্রেণির পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন আমদানি নীতি আদেশে চিংড়ি, ঘন চিনি, কৃত্রিম সরিষার তেলসহ ২৬ শ্রেণির পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আগের আদেশে ১২ শ্রেণির পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ থাকলেও এবার তা দ্বিগুণের চেয়ে বেড়েছে। গত ২৪ এপ্রিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তিন বছর মেয়াদে অর্থাৎ ২০২১-২৪ সালের জন্য এ আদেশের প্রজ্ঞাপন জারি করে। বিশ্বের যে কোনো দেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে আমদানি নীতি আদেশ অনুসরণ করতে হয়। ২০১৫-১৮ সালের আমদানি নীতি আদেশের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৮ সালের ৩০ জুন। মাঝের ২০১৮–২১ সালের আমদানি নীতি আদেশ হয়নি।

আমদানি নিষিদ্ধ পণ্যগুলো হচ্ছে

চিংড়ি মাছ, জীবিত শূকর ও শূকরজাত সব ধরনের পণ্য, ঘন চিনি, কৃত্রিম সরিষার তেল, পপি সিড ও পোস্তদানা, ঘাস (এনড্রোপোজেন এসপিপি), ওয়াইন লিজ ও আরগোল, লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি), লিকুইফাইড প্রপ্রেন ও বিউটেনস (যা এলপিজি’র অংশ) ব্যতীত পেট্রোলিয়াম গ্যাস এবং অন্যান্য গ্যাসীয় হাইড্রোকার্বন (এইচএস হেডিং ২৭ দশমিক ১১ এর সংশ্লিষ্ট সব এইচএস কোড), পেট্রোলিয়াম কোক এবং পেট্রোলিয়াম বিটুমিন ব্যতীত পেট্রোলিয়াম তেলের রেসিডিউসহ সব পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ।

এছাড়া নিম্নমানের পণ্য অথবা ব্যবহৃত, রিকন্ডিশন্ড পণ্য বা কারখানায় বাতিল পণ্য, ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, গ্যাস সিরিঞ্জ, দুই স্ট্রোক ইঞ্জিন ও চেসিসবিশিষ্ট থ্রি-হুইলার যানবাহন, ক্যাসিনোসহ জুয়া খেলার যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ ইত্যাদি, ফটোকপিয়ার, টাইপরাইটার, টেলেক্স, ফোন, ফ্যাক্স, পুরোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সামগ্রী ও পুরোনো ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, সব ধরনের শিল্প স্লাজ ও স্লাজ দিয়ে তৈরি সার ও যে কোনো পণ্য, সব ধরনের বর্জ্য পদার্থ আমদানি-নিষিদ্ধ।

তালিকায় আরও আছে, বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তর প্রকাশিত মানচিত্র অনুযায়ী বাংলাদেশের সীমারেখা দেখানো হয়নি এমন মানচিত্র, চার্ট ও ভৌগোলিক গ্লোব, হরর কমিকস, অশ্লীল, নাশকতামূলক সাহিত্য পুস্তিকা, সংবাদ সাময়িকী, পোস্টার, ফটো, ফিল্ম, কাগজপত্র, অডিও-ভিডিও টেপ ইত্যাদি পণ্যও আমদানি-নিষিদ্ধ তালিকায় রয়েছে। তাছাড়া ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন ধরনের পণ্য ও উহার পেটিকা, ‘স্টকহোম কনভেনশন অন পারসিসট্যান্ট অর্গানিক পলিউটনেস (পিওপি)’ এর আওতাধীন বিভিন্ন রাসায়নিক কীটনাশক ও শিল্পজাত দ্রব্য। এসব দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে এলড্রিন, ক্লোরডেন, ডিডিটি, ডাই-এলড্রিন, এনড্রিন, হেপ্টাক্লোর, মিরেক্স, টক্সফেন, হেক্সক্লোরোবেনজিন, পলিক্লোরিনেটেড বাই-ফিনাইল, হাইড্রোলিক হর্নসহ ৭৫ ডেসিবেলের ঊর্ধ্বমাত্রার সব হর্ন, পলি প্রোপাইলিন ও পলিথিন ব্যাগ ইত্যাদি।

নতুন আমদানি নীতিতে বলা হয়েছে, সিনেমার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনার সিনেমা ছাড়া উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত কোনো চলচ্চিত্র আমদানি করা যাবে না। তবে বাংলাদেশে নির্মিত চলচ্চিত্র সাফটাভুক্ত দেশগুলোতে রপ্তানির বিপরীতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি সাপেক্ষে সমসংখ্যক চলচ্চিত্র আমদানি করা যাবে। সব ধরনের খেলনা ও বিনোদনমূলক পণ্যের ক্ষেত্রে কোনো বয়সের শিশুর জন্য প্রযোজ্য, তা উল্লেখ থাকতে হবে এবং প্লাস্টিকের তৈরি খেলনার ক্ষেত্রে তা ‘স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়’ এই মর্মে রপ্তানিকারক দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সনদের প্রয়োজন হবে।

শর্ত সাপেক্ষে যেসব পন্য আমদানিযোগ্য

নতুন আমদানি নীতি আদেশে শর্ত সাপেক্ষে কিছু পণ্য আমদানির কথা বলা হয়েছে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে- ফার্নেস অয়েল, সাড়ে ৪ সেন্টিমিটারের কম ব্যাস বা দৈর্ঘ্যের মাছ ধরার কারেন্ট জাল, পাঁচ বছরের পুরোনো অধিক গাড়ি আমদানি, তিন বছরের বেশি পুরোনো ও ১৬৫ সিসির ঊর্ধ্বে সব ধরনের মোটরসাইকেলসহ এলএনজি ও লিকুইফাইড প্রপেন ও বিউটেনস ছাড়া পেট্রোলিয়াম গ্যাস ও অন্যান্য গ্যাসীয় হাইড্রো-কার্বন এবং পেট্রোলিয়াম কোক ও পেট্রোলিয়াম বিটুমিন ছাড়া পেট্রোলিয়াম তেলের রেসিডিউ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ঈদ পুনর্মিলনী
পরবর্তী নিবন্ধবন্ড ইস্যু করবে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক