১৬ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানির উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ১৬ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি তেল আমদানি করতে চায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এতে মোট ব্যয় হবে ১৫ হাজার ৬৪১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জ্বালানি তেলের চাহিদা মেটানোর জন্য গ্যাস অয়েল ১১,৯০,০০০ মেট্রিক টন, জেটএ-১ ১,৬০,০০০ মেট্রিক টন, ফার্নেস অয়েল ১,২৫,০০০ মেট্রিক টন মোগ্যাস ১,৫০,০০০ মেট্রিক টন, মেরিন ফুয়েল ৩০ হাজার মেট্রিক টন আমদানি করা হবে।

সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভার সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) মোট চাহিদার ৫০ শতাংশ জ্বালানি তেল কোটেশন প্রক্রিয়ার (দরপত্র) মাধ্যমে আমদানি করে থাকে। জ্বালানি তেলের সরবরাহ উৎস বহুমুখীকরণ, সরবরাহ লাইনআপ অধিকতর নিশ্চিতকরণ এবং প্রতিযোগিতামূলক দর পাওয়ার লক্ষ্যে আমদানিতব্য জ্বালানি তেলের পরিমাণকে ৫টি প্যাকেজে (এ,বি,সি,ডি এবং ই) বিভক্ত করে ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্য আন্তর্জাতিক কোটেশন আহ্বান করা হয়। কোটেশনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ১৩টি দরপত্র দলিল বিক্রি হয়। বিপিসি জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্য পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।

সূত্র জানায়, কোটেশনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক একজন দরদাতাকে ৫টি প্যাকেজের সবকয়টি অথবা যেকোনো সংখ্যক প্যাকেজের জন্য দরপ্রস্তাব করার সুযোগ রাখা হয়। দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী প্যাকেজ ‘এ’ ও ‘বি’তে আলাদাভাবে ওয়েটেড অ্যাভারেজ অনুযায়ী এবং প্যাকেজ ‘সি’ ‘ডি’ ও ‘ই’ তে ১টি করে পণ্য হওয়ার প্রস্তাবিত দর অনুযায়ী সর্বনিম্ন দর নির্ধারণ করা হয়েছে। চাহিদার বিপরীতে আমদানিতব্য পরিমাণে ফ্লেক্সিবিলিটি বিবেচনা করে কোটেশন প্রক্রিয়ায় পূর্ণাঙ্গ গ্যাস অয়েল (ডিজেল) আমদানির ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ সীমা রাখা হয়েছে। সম্ভাব্য সর্বোচ্চ চাহিদা বিবেচনা করে পণ্যের মূল্য (প্রিমিয়ামের ভিত্তিতে) নির্ধারণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পরিমাণ বিবেচনা করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, দরদাতা বা দরদাতা প্রতিনিধি ও উন্মুক্তকরণ কমিটির সব সদস্যের উপস্থিতিতে দরপত্র খোলা হয়। দরদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ‘এ’ তে ৪টি দরদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। দরদাতা প্রতিষ্ঠানসমূহ প্যাকেজ ‘এ’তে ৪টি প্রস্তাব, প্যাকেজ ‘বি’তে ২টি প্রস্তাব , প্যাকেজ ‘সি’তে ১ টি প্রস্তাব, প্যাকেজ ‘ডি’ তে ৩টি প্রস্তাব এবং প্যাকেজ ‘ই’ তে ১টি প্রস্তাব দাখিল করে। ৫টি প্যাকেজের গ্রহণযোগ্য দরদাতা প্রতিষ্ঠানের প্যাকেজ ভিত্তিক পাওয়া দর প্রস্তাবগুলোর তুলনামূলক বিবরণী প্রস্তুত করা হয়। প্রাপ্ত দরপ্রস্তাবের সঙ্গে টেন্ডার সিকিউরিটি হিসেবে ৪টি প্রতিষ্ঠানের দাখিল করা বিডবন্ডের সঠিকতা বিপিসি নিশ্চিত করে। দরপত্রের বৈধতার মেয়াদ ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।

মূল্যায়ন কমিটির ২য় সভায় কোটেশেনের কারিগরি ও আর্থিক বিষয়াদি পরীক্ষ-নিরীক্ষা করে মূল্যায়ন প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়। প্রস্তাবিত প্রিমিয়াম তথা নিরুপিত ওয়েটেড অ্যাভারেজের ভিত্তিতে প্যাকেজ ‘এ, ‘বি, ‘সি, ‘ডি’ এবং ‘ই’তে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড কে সর্বনিম্ন মূল্যায়িত ও কৃতকার্য দরদাতা হিসেবে ৫টি প্যাকেজে (প্রিমিয়াম+রেফারেন্স প্রাইস অনুযায়ী) সর্বমোট ১৮০,৯১,৮৩,৮৪৮ মার্কিন ডলার বা ১৫ হাজার ৬৪৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার দরপ্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি সুপারিশ করেছে।

এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটাকার মান আরও ৪৫ পয়সা কমলো
পরবর্তী নিবন্ধট্রাস্ট ব্যাংকের এজিএমের নতুন তারিখ ঘোষণা