দুই কার্যদিবস পর আবারও উত্থানে শেয়ারবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাজেটে শেয়ারবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ থাকতে পারে এমন খবরে দুই কার্যদিবস দরপতনের পর আবারও সূচকের উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন শেয়ারবাজারের সব সূচক বেড়েছে। সূচকের সাথে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে পাশাপাশি টাকার পরিমাণে লেনদেনও বেড়েছে।
এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, আসন্ন বাজেটে কালো টাকা সাদা করার মাধ্যমে শেয়ারাজারে বিনিয়োগের সুযোগ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরেই এমন খবর সব মহলেই আলোচনা হচ্ছে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হচ্ছে। আর এতে করে বিনিয়োগেও ফিরছেন বিনিয়োগকারীরা। এ কারণেই বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা আরও বলেন, বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করা হবে। এবারের বাজেটে শেয়ারবাজারে কালো বিনিয়োগের সুযোগসহ একগুচ্ছ প্রস্তাব থাকতে পারে। এই খবরে বিনিয়োগকারীরা গত দুই দিনে সেল মুডে থাকলেও গতকাল বাই মুডে ফিরেছে। ফলে নেতিবাচক প্রবণতা কাটিয়ে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে উভয় শেয়ারবাজার। বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, আগের দুই দিন শেয়ারবাজার বীমার দখলে থাকলেও সপ্তাহের চতুর্থ কর্মদিবসে বস্ত্র ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটধারীদের হাসিমুখ দেখা গেছে। অন্যদিকে সাধারণ বীমা খাতে দেখা গেছে উল্টো দৌঁড়। এদিন বীমা খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে।
টানা কয়েকদিন পতন প্রবণতায় থাকার পর উঠে দাঁড়িয়েছে বস্ত্র খাত। গতকাল খাতটি দর বৃদ্ধির শীর্ষে থাকার সঙ্গে লেনদেনেও ভালো করেছে। ৯০ কোটি ২৫ লাখ টাকা লেনদেনের দিনে এই খাতের ৪৫টি কোম্পানির দর বেড়ে লেনদেন হয়েছে। বিপরীতে ৯টি বা ১৫.২৫ শতাংশ কোম্পানির দর পতন হয়েছে।
অন্যদিকে হঠাৎ করে মিউচ্যুয়াল মিউচ্যুয়াল ফান্ড নড়েচড়ে বসেছে। এখাতের ২৯টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, অপরিবর্তিত থেকে লেনদেন হয়েছে ৩টির। আর ৩টির দর কমতে দেখা গেছে।
প্রধান খাতগুলোর মধ্যে বিবিধ, ওষুধ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে কিছুটা দর বৃদ্ধি দেখা গেছে। বাকি খাতগুলোতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কোম্পানির দর বাড়লেও পতনের সংখ্যাই বেশি ছিল।
গতকাল দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক বেড়েছে ১৫ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বেড়েছে ৮৯ পয়েন্ট।
গতকাল ডিএসইতে ৩৭৯টি প্রতিষ্ঠানের ২৯ কোটি ৪৩ লাখ ৭৯ হাজার ৬৬৫টি শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১৪৯টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪০টির।
অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৫ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৪৮৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে ২ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক বেড়েছে ২ পয়েন্ট। এদিন ডিএসইতে ৯১৯ কোটি ৬৫ লাখ ৭৪ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর আগের দিন মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ৭৩৯ কোটি ৮১ লাখ ৩৮ হাজার টাকার শেয়ার। সে হিসাবে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ১৮০ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- বেক্সিমকো লিঃ, শাইনপুকুর সিরামিক, ফু-ওয়াং ফুড, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, আইপিডিসি, বিডিকম অনলাইন, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, ন্যাশনাল ব্যাংক, কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ ও অরিয়ন ফার্মা।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- শাইনপুকুর সিরামিক, সিএপিএম বিডিবিএল মিঃ ফাঃ-১, সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিঃ ফাঃ, মেট্রো স্পিনিং, বিডিকম অনলাইন, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, এসইএমএল এফবিএসএল গ্রোথ ফান্ড, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিঃ ফাঃ, এইচ আর টেক্সটাইল ও ন্যাশনাল হাউজিং।

দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস, সিভিওপিআরএল, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, মনোস্পুল পেপার, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, তাক্কাফুল ইসলামি ইন্স্যুরেন্স, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স। দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৪৭পয়েন্টে।

সিএসইতে ৩০০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৬২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১০২টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টির। এদিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ১৩ লাখ ৯৩ হাজার ৫৮৩ টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ১ লাখ ৭৪ হাজার ১১০ টাকা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমে মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে আমিরাত থেকে
পরবর্তী নিবন্ধচীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর বিকল্প নেই: বাণিজ্যমন্ত্রী