মাসুদ মিয়া: দেশের শেয়ারবাজার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার সূচকের ঊত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন শেয়ারবাজারের সব সূচক বেড়েছে পাশাপাশি টাকার পরিমাণ লেনদেন বেড়েছে। তবে এদিন অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমলেও বীমা খাতের শেয়ারের চমকে ঊর্ধ্বমুখী থাকে শেয়ারবাজার। ফলে দিন শেষে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচক বেড়েছে ২০ পয়েন্ট। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বীক সূচক বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। আর বীমা খাতের তালিকাভুক্ত ৫৪টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৬টি, কমেছে চারটির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে চারটি কোম্পানির শেয়ারের দাম। বীমা খাতের পাশাপাশি আইটি খাতের প্রায় সব শেয়ারের দাম বেড়েছে। এই খাতের শেয়ারও সূচক বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) লেনদেন বেড়ে পাঁচ কার্যদিবস পর আবারও এক হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেশি হয়েছে। এর আগে শেয়ারবাজারে গুজব ছড়িয়ে পড়ে ব্যক্তি বীনিয়োগকারীরা শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে ক্যাপিটাল গেইন করলে তার ওপর কর দিতে হবে। এমন গুজব ছড়ালে গত সপ্তাহের শুরু থেকেই শেয়ারবাজারে দরপতন দেখা দেয়। গত বুধবার বড় দরপতন হলে নড়েচড়ে বসে সবাই এবং এনবীআরের পরিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ব্যক্তি বীনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল গেইন আগের মতোই করমুক্ত থাকছে। ফলে বুধবারই স্পষ্ট হয়ে যায় কোনো বীশেষ চক্র ক্যাপিটাল গেইন নিয়ে বাজারে গুজব ছড়িয়েছে। ফলে গুজব ঠেলে বৃহস্পতিবার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরে শেয়ারবাজার।
এ পরিস্থিতিতে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেনের ১৪ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেনের শেষ দুই ঘণ্টায় বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। এতে কমে মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। তবে বীভিন্ন খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দর হারাতে থাকলেও ব্যতিক্রম থাকে বীমা খাত। লেনদেনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অধিকাংশ বীমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ে। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ৪৬টি বীমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বীপরীতে দাম কমেছে চারটির। অপরিবর্তিত রয়েছে চারটির দাম। আর সব খাত মিলে ১০৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে। বীপরীতে দাম কমেছে ১৪০টির এবং ১২২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২০ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৫৩৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৩৬৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৪৩৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৮১৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ২৪২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৫৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটির ২২০ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ১৩৪ কোটি ১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৭৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেএমআই হসপিটাল অ্যান্ড রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, ইস্টার্ন হাউজিং, জিনেক্স ইনফোসিস, বীডিকম অনলাইন, ইউনিক হোটেল, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন এবং লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বীক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৬৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৫টির দাম বেড়েছে। বীপরীতে দাম কমেছে ১০১টির এবং ৯০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।