এবার যুক্তরাষ্ট্রেও রপ্তানি হবে ওয়ালটন টিভি

অর্থনীতি ডেস্ক : দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত টেলিভিশন রপ্তানি করেছে দেশীয় এই ব্র্যান্ড ওয়ালটন। সম্প্রতি গ্রিস, পোল্যান্ড, ডেনমার্ক, স্পেন, ইতালি, ক্রোয়েশিয়া, আয়ারল্যান্ড, জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানির পাশাপাশি বাজার সম্প্রসারণের কাজ করছে ওয়ালটন।

শিগগিরই আমেরিকার বাজারে রপ্তানি করা হবে বলে জানালেন ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও চিফ বিজনেস অফিসার টেলিভিশন (সিবিও) প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন।
টিভির বাজারে নিজেদের মার্কেট শেয়ার সম্পর্কে জানতে চাইলে ওয়ালটন টিভির এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান বাংলাদেশে টেলিভিশনের প্রায় ৩৭ শতাংশ মার্কেট শেয়ার ওয়ালটনের। তবে আমাদের সবচেয়ে বড় দিক হচ্ছে গত এক দুই বছর ধরে রপ্তানিকে গুরুত্ব দিচ্ছি এবং ভালো সাড়াও পাচ্ছি। এছাড়া টেলিভিশন রপ্তানির মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের পরিচয় উজ্জ্বল করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে দেশের প্রতিটি ঘরে স্বল্পমূল্যে বিশ্বমানের টেলিভিশন পৌঁছে দিয়ে ওয়ালটনকে বিশ্বের শীর্ষ ব্র্যান্ডের একটি হিসেবে এগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে ওয়ালটন।

তিনি বলেন, ওয়ালটনের রপ্তানির যাত্রা ২০০৮ সাল থেকে। এরপর ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে ২০১৯ সালের পর থেকে রপ্তানিতে আমাদের সবচেয়ে বড় গ্রোথ হয়েছে। ২০১৯ -২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমরা ৩০টির বেশি দেশে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের টিভি রপ্তানি করছি। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি সাড়া পাচ্ছি ইউরোপের দেশগুলো থেকে। ইউরোপের প্রায় ১২ টি দেশে নিয়মিত টিভি রপ্তানি করছি। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে যাদের এই মেইড ইন বাংলাদেশ লোগোযুক্ত টিভি দিচ্ছি তারা আগে চায়না থেকে পণ্য নিতেন। সম্প্রতি দেখা গেছে সে-সব প্রতিষ্ঠান এখন আমাদের থেকেই পণ্য নিতে বেশি আগ্রহী। ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ছিল ১৪৯ শতাংশ। ২০১৯ সালে রপ্তানি শুরু করে এ অর্জন আমাদের জন্য বিশাল। বর্তমানে ১২টি ইউরোপীয় দেশে নিয়মিত ওয়ালটন ব্র্যান্ডের টিভি রপ্তানি করছি।

বিশ্বের টপ ব্র্যান্ড হওয়াই একমাত্র লক্ষ্য জানিয়ে প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন বলেন, আমরা সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই ওয়ালটন ব্র্যান্ড নিয়ে যাচ্ছি। আমরা প্রথম দিকে শুরু করেছিলাম বিভিন্ন দেশের চাহিদা মতো তাদের ব্র্যান্ডের টিভি বানিয়ে দিতাম। এখন আমরা ওয়ালটন ব্র্যান্ডের টিভিকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। এতে আমরা গ্রাহকদের কাছ থেকে বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি।

নাহিদ বলেন, আমাদের আগামী বছরের পরিকল্পনা হলো যুক্তরাষ্ট্রের বাজার ধরা। সে লক্ষ্যে এ বছর সিএস ফেয়ারে আমাদের ব্র্যান্ড ওয়ালটন টিভির প্রদর্শন করতে যাচ্ছি। আমাদের সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের টপ ইলেকট্রনিকস ব্র্যান্ডের পাশে ওয়ালটনকে দেখতে পাবে বাংলাদেশের মানুষ। ওয়ালটন বলতেই যেন বিশ্বের মানুষ মেইউ ইন বাংলাদেশ বোঝে সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি।

রপ্তানির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওয়ালটন টিভি রপ্তানিতে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। তাই সরকার যদি রপ্তানিতে আমাদের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেয় তাহলে আমরা দ্রুতই আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। আমাদের লক্ষ্য ছিল ২০৩০ সালের মধ্যে টপ ব্র্যান্ডে পরিণত হওয়া। আমরা যদি সরকারে এই সহযোগিতা পাই তাহলে আমরা ২০২৫ সালেই পূরণ করতে পারবো। পাশাপাশি চায়নাকে বিট করে আমেরিকার বাজারও ধরতে পারবো বলে আশা করছি।

তিনি বলেন, আগামী জানুয়ারি থেকেই আমেরিকার বাজারে আমাদের পণ্য রপ্তানি করতে চাচ্ছি। এই বাজারে আমরা প্রথমে টিভি দিয়ে শুরু করবো। এরপর ধাপে ধাপে সব ধরনের পণ্য নিয়ে যাবো। এখান থেকে আমাদের বড় ধরনের রেমিট্যান্স আসবে।

২০৩০ সালের মধ্যে টপ ব্র্যান্ডে পরিণত হওয়ার জন্য আপনাদের প্রস্তুতি কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, উদ্যোগ বা প্রস্তুতির মধ্যে রয়েছে ইত্যোমধ্যে আমরা ইউরোপের বাজারে ১২টি দেশে রপ্তানি শুরু করেছি। আগামী বছর আমেরিকার বাজারে শুরু করবো। ২০১৯ সালে আমরা জার্মানি দিয়ে রপ্তানি শুরু করি। এই বাজারে আমাদের গ্রোথ হয়েছে ১৪৯ শতাংশ। এর অন্যতম কারণ হলো আমাদের মানসম্মত পণ্যের জন্য। ইউরোপিয়ানরা বাংলাদেশের পণ্যের ওপর আস্থা রেখেছেন। এজন্যই আমাদের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে।

তিনি বলেন, অন্য দেশের তুলনায় আমাদের পণ্যের স্থায়ীত্ব অনেক বেশি। বিভিন্ন ধরনের টেস্টিং সার্টিফিকেশনসহ আমরা রপ্তানি করে থাকি। এসব বিষয় নিশ্চিত করেই রপ্তানি করছি।

এ বছর রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা কী জানতে চাইলে চিফ বিজনেস অফিসার টেলিভিশন (সিবিও) বলেন, বর্তমানে কোভিডের থেকে খারাপ পরিস্থিতি রয়েছে সারা বিশ্বে। ইউক্রেন- রাশিয়ার যুদ্ধ। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে ডলার ক্রাইসিস চলছে। ফলে অনেক দেশে তাদের অর্ডার বাতিল করে দিয়েছে। তবে এখন পরিস্থিতি একটু ভিন্ন। যেহেতু সামনে ফিফা বিশ্বকাপ, ক্রিসমাস, নিউ ইয়ার, আইসিসি বিশ্বকাপ। তাই আশা করছি এ বছর আমাদের ভালো যাবে।

এই প্রকৌশলী জানান, বিশ্বকাপ ও ক্রিসমাস সামনে রেখে ইউরোপের ১২ টি দেশে রপ্তানির পাশাপাশি আমেরিকার বাজারে প্রবেশ করতে যাচ্ছে ওয়ালটন। এ বছর আমরা ইউরোপের জার্মানি, ক্রোরেশিয়া,ডেনমার্ক, গ্রিস, পোল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, হাঙ্গেরি, ইতালি, রোমানিয়া, স্পেন, জর্জিয়ার পাশাপাশি ইরাক, ভূটান, শ্রীলঙ্কাতসহ ৩০ টিরও বেশি রপ্তানি করছি। এর মধ্যে রোমানিয়া, জর্জিয়া ও আয়ারল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হচ্ছে।

বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা উপলক্ষে ওয়ালটন নতুন কিছু মডেল বাজারে নিয়ে আসছে জানিয়ে টেলিভিশনের চিফ বিজনেস অফিসার বলেন, নতুন মডেলের সঙ্গে নতুন কিছু অফারও থাকবে, বিশেষ কিছু চমক থাকবে গ্রাহদের জন্য। এই বিশ্বকাপে আমরা টিভির দামে ও ফির্চাসে নতুন কিছু চমক দিতে পারবো। আশা করছি অক্টোবরে প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে আমরা সে সকল অফার উদ্বোধন করতে পারবো। নতুন ফির্চাস আমাদের যুক্ত হচ্ছে। গত বছর আমরা টিভির জন্য ওটিটিপ্লাটফর্ম শুরু করি যেটার নাম হচ্ছে বঙ্গওয়াল। যেখানে গ্রাহকরা ওয়ালটন টিভির বিশেষ কিছু কনটেন্ট দেখতে পারবেন। এছাড়া কিছু লাইফ চ্যানেলও রয়েছে।

তিনি বলেন, যেহেতু আমাদের বড় গবেষণা ও উন্নয়ন সেন্টার রয়েছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সার্ভিস নেটওয়ার্কও ওয়ালটনের। এজন্যই গ্রাহকদের সব সময় ভালো সার্ভিস ও পণ্য দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি৷

বিশ্বকাপ উপলক্ষে কী চমক আনতে যাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা গুগলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সর্বাধুনিক ভার্সন টিভি তৈরিতে কাজ করছি, কাজ চলছে ডলবি সঙ্গেও। হোটেলমুড টিভি ও আনলাইন কলিং অ্যাপসও আসছে সামনে। এই অ্যাপসের মধ্যমে যেকোনো স্থান থেকে ওয়ালটন টিভির মাধ্যমে বাসার সকলের সবার সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। এছাড়া একসঙ্গে ৬০ জন মিলে কনফারেন্স করতে পারবেন। আর হোটেল মুড টিভি হলো আপনি হোটেলের রুমে বসে হোটেলের সব সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

লোকাল বাজারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, লোকাল বাজারকেও আমরা সমান গুরুত্ব দিয়ে থাকি। যেহেতু আমাদের বড় গবেষণা ও উন্নয়ন সেন্টার রয়েছে যেখানে প্রায় ১০০ জন প্রকৌশলী কাজ করছেন। আমরা নিজস্ব কারখানায় দেশীয় চাহিদা অনুযায়ী টিভি উৎপাদন করছি। ওয়ালটন বাংলাদেশের পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই টিভিগুলো তৈরি করে থাকে। কোন এলাকায় ভোল্টেজ সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তার ওপর কাজ করে ওয়ালটনের আরঅ্যান্ডডি টিম। ম্যানুফ্যাকচারিং করার সময় এই ডাটাগুলোর ওপর গবেষণা করে টিভি তৈরি করে ওয়ালটন।

তিনি বলেন, ওয়ালটন গুগল অ্যানড্রয়েড টিভির লিস্টেড পার্টনার এবং প্রথম ডলবি লাইসেন্সপ্রাপ্ত ম্যানুফ্যাকচারিং টেলিভিশন। আমরা ডলবির সাউন্ড বারসহ বিভিন্ন উন্নত প্রযুক্তির সাউন্ড সিস্টেম বাজারে এনেছি৷ এছাড়া আমরা ওয়েবওয়েস টিভির লাইসেন্সিং পাটর্নার। ওয়েবওয়েস হচ্ছে এলজির একটি অপারেটিং সিস্টেম। বাংলাদেশে যারা টিভি উৎপাদন করে তাদের মধ্যে আমরাই হলাম একমাত্র লাইসেন্স প্রাপ্ত।

আমরা শুধু বাংলাদেশের ওয়ালটন ব্র্যান্ড না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওয়েবওয়েস টিভি সরবরাহ করছি।

তিনি বলেন, বর্তমানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ওয়ালটনের বিভিন্ন সাইজের প্রায় ৩৭টি মডেলের টেলিভিশন আছে। সম্প্রতি ওয়ালটন বেশ কিছু নতুন মডেলের টিভি বাজারে নিয়ে এসেছে, যেমন—স্মার্ট ভয়েস কন্ট্রোল, অ্যানড্রয়েড, গ্লাস টিভি, ফোরকে ইএলইডি টিভি। বর্তামানে কিছু হটসেল অফার চলছে বাজারে। যেমন, ১৩ হাজার ৯০০ টাকাতে ৩২ ইঞ্চি বেসিক টিভি দিচ্ছি, ২২ হাজার টাকাতে ৩২ ইঞ্চি স্মার্ট টিভি।

ওয়ালটন টেলিভিশনের বিশেষত্ব জানতে চাইলে প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন, ওয়ালটন টেলিভিশনে সংযুক্ত হয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী টেলিভিশনটি বাংলা ও ইংরেজি ভাষার কমান্ডে সম্পূর্ণভাবে কন্ট্রোল করতে পারবেন। টিভির ব্যাকলাইট ইউনিটে যুক্ত করা হয়েছে কেএসএফ কোটেড এলইডি বার, যা ডিসপ্লে কালারকে সাতগুণ বাড়িয়ে দেয় জীবন্ত ছবি। ওয়ালটন টিভিতে ব্যবহার করা হচ্ছে এন৪৫এন৪৮ গ্রেডেড ম্যাগনেট স্পিকার, যা আইডেনটিক্যাল, মিডরেঞ্জ ও হাইরেঞ্জ বেইস সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। ডাইনামিক রেঞ্জ কম্প্রেশন (ডিআরসি) সুইফটনেস ও সুইফটফ্লো নিশ্চিত করে এবং ক্রস টক সাউন্ড টেকনোলজির সঙ্গে ইলেকট্রোঅ্যাকুস্টিক স্পিকার ডিজাইনের ফলে শব্দের প্রকৃত বিট ও ছন্দ উপভোগ করা যায়। ওয়ালটন টেলিভিশনে আছে হাইভোল্টেজ প্রটেকশন এবং এটি ৩৫ শতাংশ বেশি বিদ্যুৎসাশ্রয়ী।

ওয়ালটনের যেকোনো মডেলের টেলিভিশন কিস্তি ও ক্রেডিট কার্ডে কেনার সুবিধা রয়েছে। ক্রেডিট কার্ডে টিভি কিনলে ১২ মাস পর্যন্ত শূন্য শতাংশ ইন্টারেস্টে ইএমআই সুবিধা। কিস্তিতে ছয় মাস পর্যন্ত ইন্টারেস্ট ফ্রি। বিক্রয়োত্তর সেবার ক্ষেত্রে ওয়ালটন টেলিভিশনে রয়েছে চার বছর পর্যন্ত প্যানেল গ্যারান্টি। মাদারবোর্ড ও হার্ডওয়্যারে দুই বছর ওয়ারেন্টি। এছাড়া রয়েছে পাঁচ বছর পর্যন্ত বিক্রয়োত্তর সেবা।

ওয়ালটন ১৯৯৭ সালে সিআরটি টিভি আমদানির মাধ্যমে প্রথম টেলিভিশন বাজারে প্রবেশ করে। পরে দেশের বর্ধিত চাহিদা মেটাতে ২০০৭ সালে নিজস্ব কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে দেশেই বাণিজ্যিকভাবে টেলিভিশন উৎপাদন শুরু করে, যা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নত প্রযুক্তি সংযোজনের মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। গাজীপুরের চন্দ্রায় স্থাপিত ওয়ালটনের টিভি কারখানায় উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে বছরে ১২ লাখ টেলিভিশন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাজার মূলধন কমলো ৩ হাজার কোটি টাকা
পরবর্তী নিবন্ধডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়ালো