নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শেয়ারবাজার আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববারও সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এই নিয়ে তিন কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে সূচক নিম্নমুখী অব্যাহত রয়েছে। গতকাল শেয়ারবাজারের সব সূচক কমেছে। সূচকের সাথে টাকার পরিমাণে লেনদেনও কমেছে। তবে ডিএসইতে ১৬১ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, শেয়ারবাজারে টানা দর পতনের কারনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক কাটছে না। সে জন্য অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর পতন হচ্ছে। তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন যে দরপতন হচ্ছে তাতে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কয়েকদিনের টানা উত্থানের কারণে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেশ বেড়ে গেছে। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
রোববার লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমূখী প্রবণতা দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। তবে দুই বাজারেই দাম অপরিবর্তিত থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি।
এদিন অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে লেনদেন শুরু হওয়ায় ডিএসইর প্রধান সূচক ২২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের প্রথম আড়াইঘণ্টা সূচকের এই ঊর্ধ্বমূখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে। তবে দুপুর ১২টার পর থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমতে থাকে। ফলে দাম বাড়ার তালিকা ছোট হয়ে বড় হতে থাকে দরপতনের তালিকা। এতে সূচকের পতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৮৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৭টির। আর ১৬১টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট কমে ছয় হাজার ৪৭৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ২৯৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় এক পয়েন্ট কমে এক হাজার ৪১৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সবকটি সূচক কমার পাশাপাশি বাজারটিতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৩৪৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ৪১০ কোটি ৯২ লাখ টাকা। সেই হিসাবে লেনদেন কমেছে ৬৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৭৬ কোটি ৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ৬৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৬১ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, জেএমআই হসপিটাল অ্যান্ড রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, ওরিয়ন ইনফিউশন, জেএমআই সিরিঞ্জ, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ইন্দোবাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস এবং অ্যারামিট সিমেন্ট।
দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৫১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৯ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮১টির। এছাড়া ৮১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।