সারে ভর্তুকি কমবে না: কৃষিমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক : কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে সারে ভর্তুকি কমবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারে ভর্তুকি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কৃষিতে ভর্তুকি কমানো হবে না। আগামী জুন পর্যন্ত সারে ৪৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে সরকারকে। কৃষি উৎপাদনের বিষয়ে কোনো ঝুঁকিতে যেতে চান না প্রধানমন্ত্রী।

মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারন কমিটির সভা শেষে তিনি এ কথা জানন। এ সময় খাদ্যমন্ত্রী সাধান চন্দ্র মজুমদার, বাণিজ্য টিপু মুনশি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, সারে গত পাঁচ বছর ৮ হাজার কোটি টাকা করে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। গত অর্থবছরে দেওয়া হয়েছে ২৮ হাজার কোটি টাকা। এবার আমরা জুন পর্যন্ত স্টিমেট (প্রাক্কলন ব্যয়) করেছি, আমাদেরকে দিতে হবে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। এ টাকা কোথা থেকে আসবে? হয় কোন গুপ্তধন লাগবে, নয়তো আলাউদ্দিনের আশ্চর্য প্রদীপ লাগবে! বাংলাদেশ এ টাকা কোথা থেকে জোগাড় করবে? তা সত্ত্বেও আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি। উনি বলেছেন, এটা তোমার চিন্তার বিষয় না, আমরা সারের ব্যাপারে, কৃষি উৎপাদনের ব্যাপারে কোনো ঝুঁকিতে যাব না। কৃষির উৎপাদনটাকে আমাদেরকে সাসটেইন (দীর্ঘস্থায়ী) করতে হবে। যদি ৪৬ হাজার কোটি টাকা লাগে, এটাই আমরা দেব।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমি আপনাদেরকে আশ্বস্ত করতে চাই, আপনাদের মাধ্যমে জাতিকে আশ্বস্ত করতে চাই, ইনশাআল্লাহ সারের কোনো সংকট হবে না। প্রকৃতি যদি আমাদের সহায়ক থাকে, বোরোতেও কোনো ঝুঁকি হবে না, এটুকু আমি আপনাদের বলতে পারি। আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ সার রয়েছে। যা প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি সার আমরা সংগ্রহ করেছি।

কৃষিমন্ত্রী সারে ৪৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির কথা বললেও আইএমএফ সারের ভর্তুকি কমাতে বলেছে। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ভর্তুকি কমবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কৃষিতে ভর্তুকি কমানো হবে না।

আমনের লক্ষ্যমাত্রা এবং উৎপাদন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নেরর জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমন আমাদের একটা বড় ফসল। আগে এটি ছিল মূল ফসল। এখন অবশ্য বোরো অনেক বেশি হয়েছে। ২ কোটি টন বা তারচেয়েও বেশি বোরো হয় (উৎপাদন)। আর আমন হয় প্রায় এক কোটি ৫০ থেকে ৬০ লাখ। এই বছর শ্রাবণ মাসে একদিন বৃষ্টি হয়েছে। এটার জন্য আমরা খুব উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিলাম, বিরাট একটা আতঙ্ক ছিল; প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সবাই এটা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম যে ধান লাগানো যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, তারপর একদম শেষের দিকে কৃষকরা সেচসহ নানাভাবে তারা মোটামুটি প্লান্টেশন করেছে। আল্লাহর ইচ্ছায় বৃষ্টি হয়েছে এবং সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড়ের বৃষ্টিসহ সব মিলিয়ে আমনের অবস্থা বেশ ভালো। এ বছর বৃষ্টি না হওয়াতে বিলের তলাগুলোতেও মানুষ আমন ধান লাগাতে পেরেছে।

তিনি বলেন, এতে করে আমরা দেখেছি, আমাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এলাকা বেশি হয়েছে। ধানের এই মুহূর্তে অবস্থাও ভালো। যা বৃষ্টি হয়েছে পর্যাপ্ত। ইনশাআল্লাহ, আশা করা যায় দেরি করাতে কিছুটা উৎপাদন কম হবে, তাতে করেও মোটামুটি আমাদের টার্গেট অর্জন হবে।

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ঘাটতি হবে কী না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, খুব একটা ক্ষতি হবে না। যে ধানগুলো একটু ম্যাচিউরড হয়েছিল, সেগুলো কিছুটা পড়ে গেছে। আর এমনি দক্ষিণ এলাকায় ধানটা দিনাজপুর থেকে একমাস পরে লাগায় বা নওগাঁর চেয়ে একমাস পরে লাগায়। কাজেই আমার মনে হয় না খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিবিআই-জেডিপিসি চুক্তি: পাটপণ্য রপ্তানি বাড়বে ইউরোপে
পরবর্তী নিবন্ধঅক্টোবরে আরও কমলো রেমিট্যান্স