বগুড়া প্রতিনিধি : হিরো আলম বলেছেন, ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু থাকলেও ভোটের ফলাফলে এসে ঝামেলা করা হয়েছে। ফল পাল্টে দেওয়া হয়েছে। যে আদালতে রিট করবো।
বুধবার রাতে ভোটের ফল পাওয়ার পর নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম অভিযোগ করেন, নন্দীগ্রামে মোট ৪৯টি কেন্দ্র ছিলো। যার মধ্যে ভোট গণনা শেষে ৩৯ কেন্দ্রের ফল একটি একটি করে ঘোষণা করা হয়েছে। এতে করে ওই কেন্দ্রগুলোতে কে কতটি করে ভোট পেয়েছে সেটা সবাই অবগত। কিন্তু বাকি আরও ১০টি কেন্দ্রের ফল ওরকম করে ঘোষণা করা হয়নি। ৩৯টি কেন্দ্রের পর সরাসরি সবগুলো আসনের যোগফল দেওয়া হয়েছে। এভাবে দেওয়া হলো? মাঝখানের ১০টা কেন্দ্রের ফলাফল কেন বলা হলো না?
তিনি বলেন, আমাকে ভোটে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সমাজের কিছু শিক্ষিত মানুষ আছে তারা আমাকে মেনে নিতে চায় না। আমি নাকি পাস করলে বাংলাদেশের সম্মান যাবে। সরকারের সম্মান যাবে। কারণ যারা শিক্ষিত, যারা অফিসার তাদের হিরো আলমের মতো মানুষকে স্যার বলে ডাকতে হবে। এটা তাদের জন্য লজ্জার। এই জন্য তারা আমাকে পাস করতে দেয়নি।
হিরো আলম আরও অভিযোগ করেন, কিছু কিছু কেন্দ্রে আমাদের রেজাল্ট দেখাইছে আমি পেয়েছি ২৮টি আর মশাল মার্কার তানসেন পেয়েছেন ৫০০ ভোট। আমরা ভোট চলাকালীন প্রতিটি কেন্দ্রের বুথে গিয়ে দেখি ৭৮টি, ৮০টি, ৩৭টি করে ভোট পড়েছে। সবগুলো মিলিয়ে ৫০০টা ভোট হয় না। তাহলে আমরা এতগুলো লোক যে ভোট পেলাম সেই ভোটগুলো গেলো কই? তাই একেকটা কেন্দ্রে ৫০০টা করে ভোট পেলেন। এই ৫০০ ভোট হঠাৎ করে আসলো কোত্থেকে? আমরা নিজেরাও বুঝলাম না। এবং আমরা বিকেল থেকে প্রতিটা কেন্দ্রেই খবর নিয়েছি, আমি এমন কোন কেন্দ্র নেই যেখানে পাস করিনি। দু-একটায় ফেল করলে সেখানে আপেল মার্কার জুয়েল পাস করছে, অথবা ট্রাক মার্কা পাস করছে দু-এক জায়গায়। আমার এজেন্টরা কিন্তু যখন ফলাফল নিয়ে আসে তখন কিন্তু তারা বলেছে আলম ভাই আপনি পাস করেছেন। এতগুলো করে ভোট পেয়েছেন। পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, র্যাব বলেন, বিজিবি বলেন সবাই কিন্তু আমাকে একই কথা বলেছেন। ভোটাররাও কিন্তু ভোট দিয়ে আমাকে জানিয়েছে তারা আমাকে ভোট দিয়েছে। ফলাফল ঘোষণার আগেই ক্ষমতাসীনদের মুখে ‘মশাল পাস করছে’ এরকম কথা শোনা গিয়েছিলো।
তিনি বলেন, ভোটারদের উপস্থিতি খুবই কম। যদি এরকম ভোট হয় তাহলে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে কিভাবে যায়? আমাকে যারা ভোট দিয়েছে তারাই এই ফলাফল মেনে নিতে পারবে না। অনেক আওয়ামী লীগের লোক আমাকে ভোট দিয়েছে। তারা নিজেরা এসে আমাকে জানিয়েছেন। তারা দল দেখে ভোট দেয়নি। তারা আমাকে ভালোবেসে ভোট দিয়েছেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, এরকম ভোট হলে আস্তে আস্তে মানুষ ভোটের কথা ভুলে যাবে। কারণ, এত পরিশ্রম করে দিন নাই, রাত নাই মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে যদি মানুষের ভোট আদায় করতে না পারে তাহলে এরকম ভোট করার চেয়ে না করাই ভালো। আমি তো একটি মাত্র পিকআপ নিয়ে দুইটি আসনে ভোট করেছি। আমি কোন পোস্টার বা মাইক দিইনি। আমি নিজেই সেই পিকআপে করে প্রতিটি হাটে বাজারে পাড়ামহল্লায় গিয়েছি। সবার সাথে কথা বলে আসছি।
তিনি ভোটারদের বলেন, আমরা চেষ্টা করবো সামনে ভালো কিছু করার। আপনারা মন খারাপ করবেন না। কারণ আপনারা মন খারাপ করলে আমার মন খারাপ। আপনারা হাসি মুখ নিয়ে থাকলে আমি হাসি মুখ নিয়ে থাকবো।
সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম বলেন, আজকে সারা বাংলাদেশ তাকিয়েছিলো দেখার জন্য হিরো আলমের আজকে কি হবে। আজকে একটা জিনিসে গর্বে আমার বুকটা ভরে গেছে, বাংলাদেশে আজকে যে নির্বাচন হয়ে গেলো, মনে হচ্ছে আমি প্রধানমন্ত্রীর ভোট করলাম।
উল্লেখ্য, বগুড়ার উপনির্বাচনে বগুড়া-৬ এবং বগুড়া-৪ আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন হিরো আলম।