মাসুদ মিয়া: দেশের শেয়ারবাজার টানা দর পতনের মধ্যে আটকা পড়েছে। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া ৪ কার্যদিবসেই দরপতন হয়েছে। এতে সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের সঙ্গে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। ফলে এক সপ্তাহে ব্যবধানে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন কমেছে ১ হাজার ৬০০ হাজার কোটি টাকার ওপরে।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসই’র বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬২ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসই’র বাজার মূলধন কমেছে ১ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া মাত্র ১৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৩টির। আর ১৮২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স কমেছে ৪১ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩৭ দশমিক ১০ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৯ শতাংশ। বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ২ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বা দশমিক ১৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১১ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৫০ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচক ও ডিএসই-৩০ সূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও। গত সপ্তাহে এই সূচকটি কমেছে ১০ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৫ দশমিক ২৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৮ শতাংশ।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৭৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪২২ কোটি ২৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১৪৯ কোটি ১১ লাখ টাকা বা ৩৫ দশমিক ৩১ শতাংশ।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ১১১ কোটি ১৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ১ হাজার ১৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা বা ৪৮ দশমিক ২৫ শতাংশ। মোট লেনদেন বেশি হারে কমার কারণ ২১ ফেব্রুয়ারি শেয়ারবাজার বন্ধ থাকায় গত সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়েছে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭০ কোটি ১০ লাখ ৫১ হাজার টাকা। ৬১ কোটি ৬১ লাখ ১১ হাজার টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে শাহিনপুকুর সিরামিকস।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, অলেম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, জেমিনি সি ফুড, আমরা নেটওয়ার্ক, ওরিয়ন ফার্মা, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার এবং মুন্নু এগ্রো।