সপ্তাহ ব্যবধানে ডিএসইতে বাজার মূলধন বেড়েছে ২ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের শেয়ারবাজার গত সপ্তাহ সূচকের উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। সব ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় গেল সপ্তায় বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। সপ্তাহ ব্যবধানে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজার মূলধন দাঁড়ায় ৭ লাখ ৭২ হাজার ৫৫৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকায়। এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজার মূলধন দাঁড়িয়েছিল ৭ লাখ ৭০ হাজার ৬৩৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৯২২ কোটি ১০ লাখ টাকা।

গত সপ্তায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ৫৮৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩ হাজার ৬৭৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ৯০৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা বা ২৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ডিএসইতে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৯১৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৭৩৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। গেল সপ্তাহে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৪০২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১১৮টির, দর কমেছে ৬৯টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২০২টি কোম্পানির। লেনদন হয়নি ১৩টি কোম্পানির শেয়ার।
সপ্তাহে সব ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়। এক সপ্তাহে ব্যবধানে ডিএসইএক্স ৩৫ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৩২৫ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই৩০ সূচক ৩ দশমিক ২২ পয়েন্ট এবং শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ২ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ১৯৮ দশমিক ৫০ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৭০ দশমিক ৭৮ পয়েন্টে।

এদিকে গত সপ্তাহের শেষে ডিএসইর পিই রেশিও অবস্থান করে ১৪ দশমিক ৫৫ পয়েন্টে। আগের সপ্তাহের শেষে পিই রেশিও দাঁড়িয়েছিল ১৪ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট ছিল। এবিষয়ে শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা বলেন, কোনো কোম্পানির মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ১৫ পয়েন্ট ছাড়ালেই তা বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যদিকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসেবে সর্বোচ্চ ৪০ পিই রেশিও বেঁধে দিয়েছে। এ হিসেবে ৪০ পর্যন্ত পিইধারীর শেয়ার বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বলে জানায় বিএসইসি। সেই হিসেবে গত বৃহস্পতিবার ডিএসইর পিই দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৫৫ পয়েন্টে। পিই রেশিও হিসাবে বিনিয়োগ নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে।
গত সপ্তাহে এ ক্যাটাগরির ৮০ ভাগ কোম্পানির শেয়ার টপটেন লেনদেনে অবস্থান করেছে। এছাড়া বি ক্যাটাগরি ১০ শতাংশ এবং এন ক্যাটাগরি ১০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার অবস্থান করেছে। সপ্তাহটিতে মোট লেনদেনের ২৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ শেয়ার ১০ কোম্পানির দখলে রয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের শেয়ারে। কোম্পানিটি একাই মোট শেয়ারের ৫ শতাংশ লেনদেন করেছে। এছাড়া ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ২ দশমিক ৮২ শতাংশ, রুপালী লাইফের ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ, নাভানা ফার্মার ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ, ওরিয়ন ইনফিউশনের ২ দশমিক ৩৩ শতাংশ, জেমিনি সী ফুডের (বি ক্যাটাগরি) ২ দশমিক ৩১ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের (এন ক্যাটাগরি) ২ দশমিক ১৮ শতাংশ, মেঘনা লাইফের ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ এব সী পার্ল বিচের ১ দশমিক ৮০ শতাংশের শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
উল্লেখ্য, শেয়ারবাজারে এ ক্যাটাগরির শেয়ার বি ও জেড ক্যাটাগরির থেকে তুলনামূলক ভালো কোম্পানি। নিয়ম অনুসারে, যেসব কোম্পানি বছর শেষে তাদের শেয়ারহোল্ডারদের সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ থেকে তার ঊর্ধ্বে লভ্যাংশ (নগদ বা বোনাস) দেয় তারাই এ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার। যেসব কোম্পানি বছর শেষে তাদের শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নিচে থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ লভ্যাংশ (নগদ বা বোনাস) দেয় তারা বি-ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার। যেসব কোম্পানি বছর শেষে তাদের শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ নিচে থেকে শুরু জিরো লভ্যাংশ (নগদ বা বোনাস) দেয় তারাই জেড ক্যাটাগরি কোম্পানির শেয়ার। এছাড়া এন ক্যাটাগরি নতুন কোম্পানির শেয়ার। যেগুলোর পুঁজিবাজারের লেনদেন শুরু হয়েছে কিন্তু বছর পার হয়নি, সেইগুলো এন ক্যাটাগরিতে রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৩
পরবর্তী নিবন্ধআন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম আরও কমেছে, দেশে সিদ্ধান্ত রোববার