‘কারখানা স্থাপনে দুর্ঘটনা এড়ানোর প্রস্তুতি থাকা আবশ্যক’

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৬ সালের পর কমপ্লায়েন্স ব্যতীত কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা কারখানা ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা রোধ এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণের বিকল্প নেই বলে মনে করছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) এফবিসিসিআই আয়োজিত দ্য ইমপর্টেন্স অব সেইফ ওয়ার্কপ্লেস ইনক্লুডিং কেমিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রিক্যাল সেইফটি শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব কথা উঠে আসে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি এম এ মোমেন বলেন, অগ্নিকাণ্ড সব সময়ই একটি বড় ঝুঁকি। আগুন কখনো বলে-কয়ে আসবে না। এর হাত থেকে বাঁচতে সব ধরনের প্রস্তুতি রাখতে হবে। কারখানা মালিক এবং কর্মীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

শিল্প উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি বলেন, এখন আর আগের দিন নেই, দেশে আর যত্রতত্র কলকারখানা স্থাপন করা যাবে না। কারখানা পরিচালনা করতে হলে অবশ্যই অবকাঠামো, অগ্নি, বিদ্যুৎ এবং পরিবেশগত কমপ্লায়েন্স মানতে হবে। আপনারা সেই প্রস্তুতি নেন, এফবিসিসিআই এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

সভায় অংশ নিয়ে এফবিসিসিআইয়ের অন্য সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, বাংলাদেশ এখন নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হচ্ছে। ভবিষ্যতে আমরা উচ্চ আয়ের দেশ হবো। এখন টেকসই অর্থনীতি, টেকসই শিল্প এসব বিষয় সামনে চলে আসছে। যেখানে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা একটি বড় ইস্যু।

দুর্ঘটনা রোধ এবং নিরাপত্তার জন্য ব্যয় করাকে বাড়তি খরচ হিসেবে না দেখে, বরং বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনার পরামর্শ দেন তিনি। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাগুলোকে নিরাপত্তা বিষয়ক ছাড়পত্র প্রদানে সুদ্ধাচার চর্চার আহ্বান জানান মো. আমিন হেলালী।

সভায় অংশ নিয়ে জার্মান উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেডয়ের উপদেষ্টা এস এ এম হুসেইন বলেন, নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণগুলো কেবল আমাদের কারখানারই নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে না। এটি আমাদের অর্থনীতিকে নিরাপদ করবে। আমাদের কর্মীদের নিরাপদ রাখবে। সর্বোপরি নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা এবং মূল্যবান মতামত নিয়ে আমরা নিরাপত্তা বিষয়ক কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে চাই।

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হাফেজ হারুন, আবু হোসেন ভূইয়া রানু, আক্কাস মাহমুদ, এফবিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অ্যাম্বাসেডর মসয়ূদ মান্নান, সেইফটি কাউন্সিলের উপদেষ্টা ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল আবু নাঈম মো. শাহিদউল্লাহ, এফবিসিসিআইয়ের অগ্নিনিরাপত্তা, দুর্যোগ ও বিস্ফোরণ সম্পর্কিত স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মো. নিয়াজ আলী চিশতিসহ ব্যবসায়ী নেতারা।

জানা গেছে, নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন দেশি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে এফবিসিসিআই। যার ধারাবাহিকতায়, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা-আইএলওর সহযোগিতায় অতিঝুঁকিপূর্ণ ২০টি কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জার্মান উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেডয়ের সহায়তায় শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বৈদ্যুতিক ও রাসায়নিক নিরাপত্তা বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণেরও উদ্যোগ হাতে নিয়েছে সংগঠনটি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিঙ্গাপুর থেকে দুই কার্গো এলএনজি কিনবে সরকার
পরবর্তী নিবন্ধতিউনিশিয়া-মরক্কো থেকে ৯৫ টন সার কিনছে সরকার