নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শেয়ারবাজার টানা তিন কার্যদিবস দরপতনের পর গতকাল মঙ্গলবার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকয়টি মূল্যসূচক বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মিললেও লেনদেন খরা থেকে বের হতে পারেনি শেয়ারবাজার। গতকাল ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৩৮৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকার। যা গত চার মাসের মধ্যে ডিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেন। এর আগে চলতি বছরের ২৯ মার্চ ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৩৮২ কোটি টাকা। যা চার মাস ৯ দিন মধ্যে সবচেয়ে কম।
এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, টানা দরপতনের পর শেয়ারবাজারে সূচক বারাটাকে ইতিবাচক হিসাবে দেখছেন।
এর আগে গত সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবস এবং শেষ কার্যদিবসে শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। একই সঙ্গে এক মাসের বেশি সময় পর ডিএসইতে ৫০০ কোটি টাকার কম লেনদেন হয়। গত সপ্তাহে শুরু হওয়া লেনদেন খরা চলতি সপ্তাহেও অব্যাহত রয়েছে এবং সময়ের সঙ্গে লেনদেন খরা আরও প্রকট হয়েছে। গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে ১১০ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫২টির। আর ১৭৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৩১৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩৭১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৪৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকয়টি মূল্যসূচক বাড়লেও শুরু থেকেই ডিএসইতে লেনদেনে বেশ ধীরগতি দেখা যায়। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ধীরগতি অব্যাহত থাকে। ফলে চার মাসের মধ্যে সব থেকে কম লেনদেন দেখতে হয়েছে বিনিয়োগকারীদের। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৮৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪৬৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৮২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ২৯ মার্চের পর ডিএসইতে আবারও চারশ কোটি টাকার কম লেনদেন হলো।
এই লেনদেন খরার বাজারে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৪ কোটি ৮৪ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের ২৪ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৭ কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সোনালী পেপার।
ফু-ওয়াং ফুড, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, আরডি ফুড, জেএমআই হসপিটাল, দেশবন্ধু পলিমার, লাফার্জহোলসিম ও রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- সেন্ট্রাল ফার্মা, ফার কেমিক্যাল, অ্যাম্বী ফার্মা, অলিম্পিক এক্সেসোরিজ, আরডি ফুড, সিএপিএম আইবিবিএল মিঃ ফাঃ, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা সিমেন্ট, বীচ হ্যাচারী ও খুলনা প্রিন্টিং।
দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- খান ব্রাদার্স পিপি, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, আল-হাজ¦ টেক্সটাইল, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিঃ ফাঃ, এশিয়া প্যাসিফিক জেঃ ইন্স্যুরেন্স, পিপলস ইন্স্যুরেন্স, ডেফোডিল কম্পিউটার, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ, মুন্নু এগ্রো ও পূরবী জেঃ ইন্স্যুরেন্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৮টির এবং ৬২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১০ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।