বিনিয়োগকারীদের ভিসা-ওয়ার্কপারমিটে ভোগান্তি হবে না: বিডা

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে আসা বিনিয়োগকারীদের অনেক সময় ভিসা জটিলতা দেখা দেয়। একই সঙ্গে ওয়ার্কপারমিট পেতেও নানা সমস্যা তৈরি হয়। তাদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। পাশাপাশি কারখানা স্থাপন বা পণ্য উৎপাদনে গ্যাস, এলসি, এনবিআর বা অন্য কোনো সংস্থার সহযোগিতার প্রয়োজন পড়লেও তা নিরসনে কাজ করবে বিডা।

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিসিসিআই) আয়োজনে এক সেমিনারে এসব কথা বলেন বিডার নির্বাহী সদস্য ও অতিরিক্ত সচিব অভিজিৎ চৌধুরী।

এর আগে শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) তিন দিনব্যাপী দ্য বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ এক্সিবিশন-২০২৩ এর উদ্বোধন করা হয়। শনিবার এ প্রদর্শনীর দ্বিতীয় দিন চলছে।

প্রদর্শনী চলাকালে বিসিসিসিআই ও চাইনিজ এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিইএবি) যৌথভাবে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাধিক সেমিনার, দুই দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাকরির মেলা ও ব্যবসায়ী সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রদর্শনীতে ৬০টির বেশি স্টলে বিভিন্ন চীনা ও দেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।

বিডার নির্বাহী সদস্য অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, আমরা চাই না বিনিয়োগকারীরা কোনো ধরনের সমস্যায় পড়ুক। এটা যেকোনো দেশ বা দেশীয় উদ্যোক্তারা হতে পারেন। সবার জন্য আমাদের সহযোগিতা থাকবে। আজ আমরা জানতে পেরেছি, আকিজ গ্রুপের এক প্রতিষ্ঠান দীর্ঘসময় ধরে কারখানায় গ্যাস পাচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানটিকে আগামীকালের মধ্যে বিডা অফিসে আবেদন করতে বলেছি। আমরা কাল থেকেই তাদের সমস্যা সমাধানে কাজ করব। যেকোনো বিনিয়োগকারীর সমস্যাই আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখি।

চীনা এক বিনিয়োগকারী অভিযোগ করে বলেন, ভিসা ও ওয়ার্কপারমিট পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ বিষয়ে বিডার নির্বাহী সদস্য বলেন, এখন সব কিছু অনলাইনের মাধ্যমে আপনি করতে পারবেন। কোনো তৃতীয় পক্ষের কাছে আপনার ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিটের কাজ করাবেন না। এতে সমস্যা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আপনারা নিজেই অনলাইনে সব করতে পারবেন। এরপরও কোনো ধরনের সহযোগিতার জন্য আমাদের বলা হলে সব সময় আপনাদের সঙ্গে আছি।

চায়না এক্সপোর্টার্স অব বাংলাদেশের সভাপতি কে চ্যাং লিয়াং বলেন, গত কয়েক দশক ধরে চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ দেশের স্বপ্ন পূরণে কাজ করছে। ৬৭০টি চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রায় ১৫টি চীনা কোম্পানির দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক হেডকোয়াটার্স এখানে রয়েছে। এসব কোম্পানি সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। তারা বাংলাদেশ ও চীনের অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহযোগিতার প্রধান চালিকাশক্তি।

বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিসিসিআই) সভাপতি গাজী গোলাম মর্তুজা বলেন, আমাদের দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রয়েছে। বিনিয়োগের দারুণ পরিবেশ রয়েছে। আপনারা এখানে (বাংলাদেশে) বিনিয়োগ করুন। আমাদের জমি আছে, জমির সমস্যা নেই, আপনার বিনিয়োগ করতে আসুন, সব ধরনের সহযোগিতা পাবেন আপনারা।

বিসিসিসিআই সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা বলেন, করোনাকালে প্রায় তিন বছর চীনের সঙ্গে আমাদের ব্যবসায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে, বিনিয়োগ ব্যাহত হয়। চলতি বছর থেকে আবারও চীনের বিনিয়োগ বাড়তে শুরু করেছে। আমাদের রিজার্ভ সংকটকালে চীনের বিনিয়োগ ভালো সহযোগী হিসেবে কাজ করবে। দেশের মধ্যে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় একটি স্পেশাল চীনা ইকোনমিক জোন হচ্ছে। চীনের বড় বড় প্রকল্পে বিনিয়োগের ফলে আমরা টেকনোলজির বিষয়েও অভিজ্ঞতা লাভ করছি। আগামীতে চীনে আমাদের বাণিজ্য নিয়ে সেমিনার করার ইচ্ছা আছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চীনা দূতাবাসের কাউন্সিলর সং ইয়ং, এনবিআরের প্রথম সচিব (শুল্ক মূল্যায়ন ও পুরস্কার) খন্দকার নাজমুল হক, এনবিআর প্রথম সচিব (শুল্ক ও ভ্যাট প্রশাসন) মনিরুজ্জামান, বিডার ডিরেক্টর জেনারেল শাহ মোহাম্মদ মাহবুব বেপজার নির্বাহী পরিচালক তানভির হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় সমন্বিত প্রচেষ্টা চান প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধবিশ্বে খাদ্যের দাম দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন: এফএও